৫.২.১ ইলহামী কবিতা কাসিদায় কি বলে
কাসীদায়ে শাহ্ নিয়ামাতুল্লাহ (রহঃ) তে হিন্দুস্তানের ফিতনা নিয়ে বলার সময়ে সেই ফিতনার অবসান করবেন যিনি তার ব্যাপারে ইঙ্গিত দিয়েছেন।
৪৪) “সাহেবে কিরান” ও “হাবীবুল্লাহ” হাতে নিয়ে শমসের।
খোদায়ী মদদে ঝাঁপিয়ে পড়িবে ময়দানে যুদ্ধের।
এই প্যারাতে বলা দুইজন ব্যক্তি যারা হিন্দুস্তানে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়বে তাদের মধ্যে যাকে হাবীবুল্লাহ নামে চিহ্নিত করা হয়েছে তিনিই হচ্ছেন সেই ব্যক্তি যাকে ইমাম মাহমুদ বলা হয়। যার মাধ্যমে হিন্দুস্তান বিজয়ী হবে। হাদিসেও সরাসরি বলা হয়েছে যে, ইমাম মাহমুদ এর উপনাম হবে হাবীবুল্লাহ। এই হাদিসটি ‘৫.২.৩ হাদিস কি বলে’ পয়েন্টে দেওয়া হয়েছে।
৫.২.২ ইলহামী কবিতা আগামী কথন কি বলে
আশ-শাহ্রান এর আগামী কথনেও ইমাম মাহমুদ এর ব্যাপারে বলা হয়েছে। কয়েকটি প্যারাতেই তাকে নির্দেশ করা হয়েছে ইঙ্গিতে। ভবিষ্যতে তার দায়িত্ব কি সেটাও এখানে উল্লেখ হয়েছে।
প্যারাঃ (৫)
প্রস্তুত নিবে ক্ষুদ্র সেনারা,
"শীন"-"মীম" এর নীড়ে।
দিয়ে জয় গান -"আল্লাহ মহান",
আঘাত হানিবে শত্রুর ঘাড়ে।
এখানে উল্লিখিত মীম দ্বারা ইমাম মাহমুদকে ইঙ্গিত করা হয়েছে। আরবি হরফ মীম দিয়েই মাহমুদ শব্দটি শুরু হয়। তার আনুগত্য হয়ে একটি জামাত আগে থেকেই যুদ্ধের জন্য প্রস্তুতি নিতে থাকবে এটি বলা হয়েছে এখানে।
প্যারাঃ (১৯)
আহাজারী আর কান্নায় ভারী,
সে ভূমি হইবে ঘোর কারবালা।
খোদার মদদে "শীন" "মীম" সেক্ষণে,
আগাইবে করিতে শত্রুর মুকাবিলা।
আগামী কথনের আরেকটি প্যারাতেও এই মীম এর কথা বলা হয়েছে যেখানে বলা হয়েছে আল্লাহর সাহায্যে তারা হিন্দুস্তানে দ্বিতীয় কারবালা বা আবারো বড় গণহত্যা হওয়ার সময় শত্রুদের মুকাবিলা করার জন্য আগাইবে। আর এ থেকে এটিও প্রমাণ হয় যে, তিনি হিন্দের যুদ্ধের আমীর হবেন। এই হাদিসটি ‘৫.২.৩ হাদিস কি বলে’ পরিচ্ছেদে দেওয়া হয়েছে।
প্যারাঃ (২০)
"শীন" সে তো "সাহেবে কিরান",
"মীম"-এ "হাবীবুল্লাহ"!
জালিমের ভূমিতে ঘটাইবে মহালয়,
সাথে আছে "মহান আল্লাহ"!
এই প্যারায় লেখক (আশ-শাহরান) সে পূর্বে আলোচিত "শীন" ও "মীম" এর পরিচয় প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন, "শীন" হলো সাহেবে কিরান এবং "মীম" হলো হাবীবুল্লাহ। অর্থাৎ, শীন হরফ দিয়ে যার নামটি শুরু তার উপাধি হলো সাহেবে কিরান! মীম হরফ দিয়ে যার নামটি শুরু তার উপাধি হলো হাবীবুল্লাহ!
আর এই মীম দিয়ে যার নাম তথা মাহমুদ সেই হচ্ছেন হাবীবুল্লাহ। এখানে তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন যদিও পুরো নাম দেন নাই। কাসিদায়ে শাহ্ নিয়ামাতুল্লাহ তেও এটি বলা হয়েছে।
প্যারাঃ (২১)
"হাবীবুল্লাহ" প্রেরিত আমীর,
সহচর তার "সাহেবে কিরান"।
কিরানের হাতে থাকিবে জিহাদের,
কুদরতি অস্ত্র "উসমান"!
এখানে লেখক (আশ-শাহরান) দুইটি ব্যক্তিত্বকে প্রকাশ করলেন, তার মধ্যে প্রথম ব্যক্তি "মীম" হরফে নামের শুরু তার উপাধিই হলো "হাবীবুল্লাহ"। তিনি আল্লাহ প্রদত্ত নেতা বা আমীর বা ইমাম। এ থেকে প্রমাণ হয় যে, যিনি হাবীবুল্লাহ উপাধি পাবেন তিনিই আমীর বা ইমাম অর্থাৎ নেতা হবেন। এই বিষয়টি হাদিসেও সরাসরি উল্লেখ পাওয়া যায়। আল্লাহ প্রদত্ত নেতাদের আনুগত্যের ব্যাপারে হাদিসে এসেছে-
হযরত আবু বকর (রা:) বলেন, তোমরা যদি জান্নাতে নবী ﷺ এর সঙ্গী হতে চাও, তবে আল্লাহর পক্ষ থেকে আগমনকারী ব্যাক্তিদের মহব্বত করো, আর তাদের সঙ্গী হও।
- (আস সুনানু কিতাবুল ফিরদাউস ৮৫৬)
প্যারাঃ (৩৬)
মহা সমরের পূর্বে দেখিবে,
প্রকাশ পাইবেন "মাহমুদ"।
পাশে থাকিবেন "শীন" ও "জ্যোতি",
সে প্রকৃতই রবের দূত।
৩য় বিশ্বযুদ্ধের আগেই মাহমুদ নামের একজন ব্যক্তি। এখানে ইমাম মাহমুদকেই ইঙ্গিত করেছে আগামী কথনে। তার পাশে যে শীন থাকবে সেটাও আগের মতই বলা হয়েছে।
প্যারাঃ (৩৮)
হাতে লাঠি, পাশে জ্যোতি,
সাথে সহচর "শীন"।
মাহমুদ এসে এই জমিনে,
প্রতিষ্ঠা করিবেন দ্বীন।
প্যারাঃ (৩৯)
"সত্য"-সহ করিবেন আগমন
তবুও করিবে অস্বীকার।
হক্বের উপর করবে বাতিল,
কঠিন অন্যায়-অবিচার।
৩৮ নং প্যারাতে এসেছে মাহমুদ নামের ব্যক্তি হিন্দুস্তানে দ্বীন কায়েম করবেন। আর তার হাতে লাঠি থাকবে। এই লাঠি থাকার কারণ হচ্ছে তার যাতে চলতে সুবিধা হয়। এ থেকে বুঝা যায় তার হাটা-চলাতে কোন অসুবিধা অবশ্যই আছে বা এমনিতেও রাখতে পারে। কিন্তু হাদিসে এসেছে তিনি হবেন দুর্বল। এখানেও এটি মিলে যায়। তার পরের প্যারা ৩৯ এ বলা হয়েছে সে সত্যসহ আগমন করলেও তাকে অস্বীকার করা হবে।
প্যারাঃ (৬৪)
বাদশাহী পেয়ে বিশ্বনেতা,
সাত থেকে নয় বছরের পর।
ভারপ্রাপ্ত করিবে খেলাফত,
মাহদী, মাহমুদ এর উপর।
প্যারাঃ (৬৫)
দু সনের মধ্যেই ইমাম মাহমুদ,
বিশ্ব শাসন ভার।
হস্তান্তর করিবেন খেলাফত,
‘মানসুরের’ উপর।
প্যারা ৬৪ তে বলেছে যে, ইমাম মাহদী সাত থেকে নয় বছর খলীফা থাকার পরে ইমাম মাহমুদকে ভারপ্রাপ্ত করিবেন। আর হাদিসেও এসেছে তিনি মাহদীর পরে খলীফাও হবেন। আর প্যারা ৬৫ তে বলা হয়েছে, তিনি ২ বছরের মাথায় তার খিলাফত আরেকজনকে হস্তান্তর করবেন। এটিও হাদিসে পাওয়া যায় যে, তিনি ইমাম মাহদী এর পর দুই বছরের খিলাফত পাবেন। হাদিসে এসেছে-
হযরত আরতাত (রা:) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইমাম মাহদীর শাসনের পর দুই বছর মাহমুদ শাসন করবে। যে হবে খুব কঠোর, আর দুর্বলদের জন্য কোমল অন্তরের।
- (আস সুনানু কিতাবুল ফিরদাউস, অধ্যায়ঃ যুদ্ধ বিগ্রহ, হাঃ ৭৭১)
৫.২.৩ হাদিস কি বলে
ইয়াহ্ইয়া ইব্ন উছমান (রহঃ) .... আবদুল্লাহ্ ইব্ন উমার (রা:) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ একদিন আমরা রসূলুল্লাহ্ ﷺ এর কাছে বসে ছিলাম। এ সময় তিনি ফিত্না সম্পর্কে দীর্ঘ আলোচনা করেন; এমন কি তিনি ‘ইহ্লাসের’ ফিত্নার কথাও উল্লেখ করেন। এ সময় জনৈক ব্যক্তি জিজ্ঞাসা করেঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ্! ’ইহ্লাসের’ ফিত্নাটা কিরূপ? তিনি বলেনঃ তা হলো- পলায়ন ও ধ্বংস। এরপর তিনি সাররা ফিত্নার (এর অর্থ প্রাচুর্যতার-সম্পদের ফিতনা) কথা উল্লেখ করে বলেনঃ তা এমন এক ব্যক্তির দ্বারা সংঘটিত হবে, যাকে লোকেরা আমার বংশের লোক বলে মনে করবে, কিন্তু আসলে সে আমার বংশের লোক হবে না (অর্থাৎ ভণ্ড মাহদীর দাবীদার হবে সেই লোক)। কেননা, আমার বন্ধু-বান্ধব তো মুত্তাকী লোকেরাই। এরপর লোকেরা এমন এক ব্যক্তির নেতৃত্বের উপর একমত হবে, যে দুর্বল চিত্ত ও লেংড়া হবে। (তার শাসনকাল দীর্ঘ হবে না)
এরপর চরম ফিতনা প্রকাশ পাবে, যা এ উম্মতের কাউকে এক চড় না দিয়ে ছাড়বে না। এরপর লোকেরা যখন বলাবলি করতে থাকবে যে, ফিত্নার সময় শেষ হয়ে গেছে, তখন তা আরো বৃদ্ধি পাবে (অর্থাৎ দিন দিন তা বাড়তেই থাকবে)। তখন এমন অবস্থার সৃষ্টি হবে, সকালে যে মু’মিন থাকবে, সে সন্ধ্যায় কাফির হয়ে যাবে। এ সময় লোকেরা বিভিন্ন দুর্গে আশ্রয় গ্রহণ করবে। আর মুসলিমরা যে দুর্গে অবস্থান করবে, সেখানে কোন মুনাফিক থাকবে না এবং যেখানে মুনাফিকরা থাকবে, সেখানে কোন মু’মিন লোক থাকবে না। তোমরা যখন এ অবস্থায় পৌঁছবে, তখন দাজ্জাল বের হওয়ার অপেক্ষা করবে-ঐ দিন থেকেই বা পরের দিন (অর্থাৎ এরপর খুব দ্রুতই বের হবে)। *
- (সহীহ, সুনান আবূ দাউদ (তাহকিককৃত/ আলবানী একাঃ) ৪২৪৩ [ইঃ ফাঃ ৪১৯৫]; মিশকাত হাঃ একাঃ ৫২৯৩; সিলসিলাতুস সহীহাহ ৯৭২; মুসনাদে আহমাদ ৬১৬৮ (২/১৩৩); মুসতাদরাকে হাকিম ৪/৪৬৭)
- * এই চরম ফিতনাই হচ্ছে মাহদীর আগমনের আগের মহামারী, দুর্ভিক্ষ ও যুদ্ধ-বিগ্রহ। এতে ৩য় বিশ্বযুদ্ধও অন্তর্ভুক্ত। এই ফিতনার কারণে পৃথিবীর ৩ ভাগের ২ ভাগ মানুষই মারা যাবে। এ বিষয়ে বিস্তারিত এই অধ্যায়টি দেখলে জানা যাবে।
عن علي بن ابي طالب رضى الله عنه ان رسول الله صلى الله عليه و سلم قال يأتى على المسلمين زمان يكثر فيه المشركون من الهند ظلما فيخرج من مشرق الهند إمام يقال له محمود و يقال لابيه قدير و يكون أن يره ضعيفا جدا و يفتح الله به المسلمين فى غزوة الهند.
- آخر الزمان المهدى فى علامات القيامة : باب: غزوة الهند -٢٣٠
হযরত আলী (রা:) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রসূল ﷺ বলেছেন, অচিরেই হিন্দুস্তানের মুশরিকরা মুসলমিদের প্রতি নির্যাতন বৃদ্ধি করবে। সে সময়ে হিন্দুস্তানের পূর্ব অঞ্চল থেকে একজন নেতার প্রকাশ ঘটবে। যার নাম হবে মাহমুদ। পিতার নাম আব্দুল ক্বদির। সে দেখতে খুবই দুর্বল হবে। তার মাধ্যমে আল্লাহ হিন্দুস্তানের মুসলিমদের বিজয় দান করবেন।
- (আখীরুজ্জামানা আল মাহদী ফিল আলামাতিল কিয়ামাহ, অধ্যায়ঃ গাজওয়াতুল হিন্দ, ২৩০; ক্বাশ্ফুল কুফা ২৬১)
عن ابي هريرة رضي الله عنه قال سمعت رسول الله صلى الله عليه و سلم يقول يوشك على المسلمين يكثر الظالمين المشركون من الهند فيما يخرج من مشرقها القرية جماعة المسلمين الذين يديرهم شاب ضعيف اسمه محمود و لقبه حبيب الله و يفتح الهند ثم بعد ذلك يسعى الى بيت الله فقلت يا رسول الله لم يسعى الى بيت الله ؟ هل هذا الزمان يقبضه بايد اليهود و النصارى؟ فقال لا بل يأتى أن يبايع على خليفة الله المهدى.
- آخر الزمان المهدى فى علامات القيامة : باب: غزوة الهند -٢٣١
আবু হুরায়রা (রা:) বলেন, আমি রসূল ﷺ কে বলতে শুনেছি, অদূর ভবিষ্যতে হিন্দুস্তানের মুশরিকরা মুসলিমদের উপরে খুবই অত্যাচার করবে। সে সময়ে হিন্দুস্তানের পূর্ব অঞ্চল হতে একটি মুসলিম জামাতের প্রকাশ ঘটবে। যাদের পরিচালনা করবে একজন দুর্বল বালক। যার নাম হবে মাহমুদ, উপাধি নাম হবে হাবীবুল্লাহ। তিনি হিন্দুস্তান বিজয়ের পর কাবার দিকে ধাবিত হবে। আমি (আবু হুরায়রা) জিজ্ঞেস করলাম, "হে আল্লাহর রসূল ﷺ, সে কাবার দিকে ধাবিত হবে কেন? সেই সময় কি বাইতুল্লাহ ইহুদী-খ্রিষ্টানদের দখলে থাকবে?" তিনি বলেন, না। বরং সে আল্লাহর খলীফা মাহদীর হাতে বাইয়াত নিতে আসবে।
- (আখীরুজ্জামানা আল মাহদী ফিল আলামাতিল কিয়ামাহ, অধ্যায়ঃ গাজওয়াতুল হিন্দ, ২৩১; কিতাবুল আক্বিব ১২৫৬; ক্বাশ্ফুল কুফা ৭৩২; আল আরিফুল ফিল ফিতান ১৭০৩)
عن ابي هريرة رضى الله عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه و سلم يوشك أن يكثر اليهود و النصارى ظلما كثيرا على المسلمين العلمين لا يلقيهم احد إلا قوى من الخرسان و كذلك المشركون من الهند ظلما كثيرا على المسلمين ويخرج فى ذلك الزمان شاب ضعيف من البلد الذى سمي العسرى من مشرق الهند اسمه محمود و اسم ابيه عبد و يفتح الهند إمام المسلمين.
- آخر الزمان المهدى فى علامات القيامة : باب: غزوة الهند -٢٣٢
হযরত আবু হুরাইরা (রা:) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রসূল ﷺ বলেছেন, অদূর ভবিষ্যতে বিশ্বের মুসলমানদের উপর ইহুদী-নাসারাগণ অত্যাচার বৃদ্ধি করে দিবে। তখন কেবল খোরাসানীরাই তাদের মোকাবেলায় সুদৃঢ় থাকবে। এরূপ হিন্দুস্তানের মুশরিকরাও মুসলিমদের প্রতি নির্যাতন বৃদ্ধি করে দেবে। সে সময়ে হিন্দুস্তানের পূর্ব ভূখন্ডের দূর্গম নামক একটি অঞ্চল থেকে একজন দুর্বল বালকের আত্মপ্রকাশ ঘটবে। যার নাম হবে মাহমুদ। তার পিতার নাম আব্দীল (নামে আব্দিল বা আব্দুল থাকবে)। সে মুসলিমদের নেতৃত্ব দিয়ে হিন্দুস্তান বিজয় করবে।
- (আখীরুজ্জামানা আল মাহদী ফিল আলামাতিল কিয়ামাহ, অধ্যায়ঃ গাজওয়াতুল হিন্দ, ২৩২)
عن ابي بكر رضى الله عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه و سلم يخرج في آخر الزمان إمام محمود و صاحبه شميم البراح و يأتى بهما للمسلمين الفتح الكبير و كأنهما يقربان قبل أن يخرج المهدى.
- السنن كتاب الفردوس ٨٧٢ ، آخر الزمان المهدى فى علامات القيامة
হযরত আবু বকর সিদ্দিক (রা:) থেকে বর্ণিত- তিনি বলেন, রসূল ﷺ বলেছেন, শেষ জামানায় ইমাম মাহমুদ ও তার বন্ধু (সাহেবে কিরান) শামীম বারাহর প্রকাশ ঘটবে। আর তাদের মাধ্যমে মুসলমানদের বড় বিজয় আসবে। আর তা যেন মাহদীর আগমনের সময়।
- (আস সুনানু কিতাবুল ফিরদাউস ৮৭২; আখীরুজ্জামানা আল মাহদী ফিল আলামাতিল কিয়ামাহ, অধ্যায়ঃ শেষ জামানায় আত্মপ্রকাশকারী নেতা)
عن ابي سعيد الخدرى قال قال رسول الله صلى الله عليه و سلم يخرج إمام قبل المهدى و اسمه محمود واسم ابيه عبد و يكون أن يره ضعيفا و القى الله في وجهه رحمة و إنه عند الناس غريبا يعرفونه و ليأتين الله بهذا الامام و صاحبه الذى يلقبه صاحب القران فتحا للمؤمنين.
- آخر الزمان المهدى فى علامات القيامة
আবু সাঈদ খুদরী (রা:) বলেন, রসূল ﷺ বলেছেন, মাহদীর পূর্বে এক জন ইমামের আর্বিভাব হবে আর তার নাম হবে মাহমুদ। তার পিতার নাম হবে আব্দিল বা আব্দুল (অর্থাৎ নামে আব্দিল বা আব্দুল থাকবে)। সে দেখতে হবে দুর্বল, আর তার চেহারায় আল্লাহ মায়া দান করবেন। আর তাকে সে সময়ের খুব কম লোকই চিনবে। অবশ্যেই আল্লাহ সেই ইমাম ও তার বন্ধু -যার উপাধি হবে সাহেবে কিরাণ, তাদের মাধ্যমে মুমিনদের একটি বিজয় আনবেন।
- (ইলমে রাজেন ৩৪৭; আস সুনানু কিতাবুল ফিরদাউস ৭৫৪; ইলমে তাসাউফ ১২৫৩; আখীরুজ্জামানা আল মাহদী ফিল আলামাতিল কিয়ামাহ)
عن حذيفة بن اليمانى رضى الله عنه قال قال سمعت رسول الله صلى الله عليه و سلم يقول يخرج في آخر الزمان من مشرق الهند أمير قبل المهدى و هو من اسم العسرى البلد من اهل القرية فكى اسمه محمود و اسم ابيه قدير و اسم امه سهرى و يفتح الهند بيده.
- آخر الزمان المهدى فى علامات القيامة
হজরত হুযাইফা বিন ইয়ামান রা: থেকে বর্ণিত, আমি রসূল ﷺ কে বলতে শুনেছি, শেষ জামানায় মাহদির পূর্বে, হিন্দের পূর্ব অঞ্চল থেকে একজন আমীর বের হবে এবং সে দুর্গম এলাকার, পাকা নামের অঞ্চলের অধিবাসী হবে। তার নাম মাহমুদ, তার পিতার নাম কদির ও তার মাতার নাম সাহারা হবে এবং তার হাতে হিন্দুস্তানের বিজয় হবে।
- (আখীরুজ্জামানা আল মাহদী ফিল আলামাতিল কিয়ামাহ)
عن أنس رضى الله عنه قال إنى و بلال كنا جلوسا في مجالس رسول الله صلى الله عليه و سلم و حينئذ يضع يده علي منكب البلال فقال ألم تعلم يا بلال؟ يخلق الله في اولادك النجم الثاقب ولدا الذي هو صاحب القران و إنه ليتصحب إماما قال لعله قال هو يخرج قبل المهدى.
- آثار السنن ٣٢٤٨ ، آخر الزمان المهدى فى علامات القيامة
হযরত আনাস (রা:) বলেন, একদা রসূল ﷺ এর এক মজলিসে আমি আর বিলাল (রা:) বসা ছিলাম। সে সময়ে আল্লাহর রসূল ﷺ বিলাল (রা:) এর কাঁধে তার ডান হাত রেখে বললেন, “হে বিলাল! তুমি কি জানো? তোমার বংশে আল্লাহ এক উজ্জল তারকার জন্ম দিবেন, যে হবে সে সময়ের সবচেয়ে সৌভাগ্যবান ব্যক্তি। অবশ্যেই সে একজন ইমামের সহচর হবে।” রাবি বলেন, সম্ভবত রসূল ﷺ বলেছেন, সেই ইমামের আগমন ইমাম মাহদীর পূর্বেই ঘটবে।
- (আসারুস সুনান ৩২৪৮; আখীরুজ্জামানা আল মাহদী ফিল আলামাতিল কিয়ামাহ, অধ্যায়ঃ শেষ জামানায় আত্মপ্রকাশকারী নেতা, পৃষ্ঠাঃ ৩০ যাতে “রাবি বলেন...” এই উক্তিটি নেই।)
আবু বাসির (রঃ) বলেন, জাফর সাদিক (রঃ) বলেছেন, মাহদীর আগমনের পূর্বে এমন একজন খলীফার আবির্ভাব ঘটবে যিনি হবেন মাতার দিক থেকে কাহতানী এবং পিতার দিক থেকে কুরাঈশী। তার নাম মাহদীর নামের সাথে কিছুটা সাদৃশ্যমান হবে এবং তার পিতার নামও কিছুটা মাহদীর পিতার নামের সাদৃশ্যমান হবে। *
- (ইলমে তাছাউফ ১২৮ পৃঃ; তারিখে দিমাশাক ২৩২ পৃঃ)
- * ইমাম মাহদীর আসল নাম হবে মুহাম্মাদ। আর মুহাম্মাদ এর সাথে মাহমুদ নামটি সাদৃশ্যপূর্ণ। তার পিতার নাম আব্দুল্লাহ এর সাথে আব্দুল কাদীর নামটি সাদৃশ্যপূর্ণ। অর্থাৎ ইমাম মুহাম্মাদ ইবনে আব্দুল্লাহ এবং ইমাম মাহমুদ ইবনে আব্দুল কদীর।
বুরায়দা (রা:) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রসূল ﷺ কে বলতে শুনেছি, খুব শীঘ্রই মুশরিকরা তাদের বন্ধু অঞ্চলের মুসলমানদের উপর অত্যাচার বৃদ্ধি করে দেবে আর নির্বিচারে হত্যা করবে। তখন সেখানকার দূর্গম নামক অঞ্চল তথা বালাদি লিল উছরো থেকে একজন দুর্বল বালক তাদের মুকাবিলা করবে। আর তার নেতৃত্বেই মুমিনদের বিজয় আসবে (গাজওয়াতুল হিন্দ বিজয়)। রাবি বলেন, তিনি আরো বলেছেন, তার একজন বন্ধু থাকবে যার উপাধী হবে সৌভাগ্যবান।
- (আস সুনানুল ওয়ারিদাতু ফিল ফিতান ১৭৯১; আসারুস সুনান ৮০৩; আস সুনানু কিতাবুল ফিরদাউস ৮৮১)
হযরত ফিরোজ দায়লামী (রা:) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আখেরী জামানায় ইমাম মাহদীর পূর্বে ইমাম মাহমুদ এর প্রকাশ ঘটবে। সে বড় যুদ্ধের শক্তির যোগান দিবে। তার জামানায় মহাযুদ্ধের (৩য় বিশ্বযুদ্ধে) বজ্রাঘাতে (আনবিক অস্ত্রে) বিশ্বের অধ্বঃপতন হবে এবং বিশ্ব এই সময়ে ফিরে আসবে (অর্থাৎ আধুনিকতা ধ্বংস হয়ে প্রাচীন যুগে ফিরবে)। সে তার সহচর বন্ধু সাহেবে কিরান শামীম বারাহকে সাথে নিয়ে যুদ্ধ পরিচালনা করবে, যে বেলাল ইবনে বারাহ-এর বংশোদ্ভুত হবে। তোমরা তাদের পেলে জানবে ইমাম মাহদীর প্রকাশের সময় হয়েছে।
- (আসরে যুহরি ১৮৭ পৃঃ; তারিখে দিমাশাক ২৩৩ পৃঃ; ইলমে তাছাউফ ১৩০ পৃঃ; ইলমে রাজেন ৩১৩ পৃঃ; বিহারুল আনোয়ার ১১৭ পৃঃ)
- অধিকাংশ মুহাদ্দিছগণ ব্যক্ত করেছেন উক্ত হাদিসটি সহীহ, কেউ কেউ হাসান।
হযরত সালিম ইবনে আব্দুল্লাহ (রহ.) বলেন, আমি আমার পিতা থেকে শুনেছি, রসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন খুব শীঘ্রই হিন্দুস্তানের মুশরিকদের পতন হবে। আর তা হবে এক দুর্বল বালকের নেতৃত্বে। আর তার নাম হবে মাহমুদ। আল্লাহ তার মাধ্যমে হিন্দুস্তানে শান্তি প্রতিষ্ঠা করবেন। (প্রয়োজনীয় অংশ)
- (আস-সুনানু কিতাবুল ফিরদাউস ১৫৩৮, ১৭০৩; কিতাবুল আক্বিব ১৩৭)
হযরত কাতাদাহ (রা:) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলে পাক ﷺ বলেছেন, অদূর ভবিষ্যতে মুশরিকদের সাথে মুমিনদের একটি জিহাদ হবে, আর সেই যুদ্ধের শহীদরা কতইনা উত্তম। আমি বললাম, হে আল্লাহর রসূল ﷺ! সেই যুদ্ধের নেতৃত্ব দিবেন কে? তিনি বললেন, উমর (রা:) এর বংশের এক দুর্বল বালক।
- (আস-সুনানু কিতাবুল ফিরদাউস ৭৮৭)
হযরত আবু হুরায়রা (রা:) বলেন, রসূল ﷺ বলেছেন, শেষ জামানায় পথভ্রষ্ট আলেম বৃদ্ধি পাবে। আর তাঁরা দ্বীনকে মৃত্যুর অবস্থায় নিয়ে যাবে। ঠিক তখন আল্লাহ তা'আলা হযরত উমর (রা:) এর বংশ থেকে একজন বালক কে পাঠাবেন। যার মাধ্যমে দ্বীন জীবিত হবে।
- (আস-সুনানু কিতাবুল ফিরদাউস ৮০৬)
হযরত মুয়াজ ইবনে জাবাল (রা:) বলেন, রসূল ﷺ বলেছেন, দুর্বল ব্যক্তিরাই জান্নাতের অধিকারী। আর শেষ জামানায় একজন দুর্বল বালকের প্রকাশ ঘটবে। সে দাম্ভিক ও অত্যাচারী মুশরিকদের মুকাবিলা করবে।
- (আস-সুনানু কিতাবুল ফিরদাউস ৮৮০)
হযরত বিলাল ইবনে রাবাহ রা: বলেন, রসূল ﷺ বলেছেন, হিন্দুস্তান মুসলমানরা শাসন করবে। আবার তা মুশরিকরা দখল করবে এবং তারাই সেখানে তাদের সকল হুকুম প্রতিষ্ঠা করবে। আবার তা মুসলমানরা বিজয় করবে যাদের নেতা হবে মাহমুদ এবং সেখানে আল্লাহর হুকুম প্রতিষ্ঠিত হবে। আর তা ঈসা ইবনে মারিয়াম (আ.) পর্যন্ত প্রতিষ্ঠিত থাকবে। (প্রয়োজনীয় অংশ)
- (আস-সুনানু কিতাবুল ফিরদাউস ১৭০৮; কিতাবুল আক্বিব ১৩৮)
হযরত আনাস (রা:) বলেন, রসূল ﷺ বলেছেনঃ হিন্দুস্তান মুশরিকদের থেকে মুমিনরা বিজয় করবে। আর তাদের নেতা হবে মাহমুদ। হিন্দুস্তানে সে শান্তি প্রতিষ্ঠা করবে। (প্রয়োজনীয় অংশ)
- (আস-সুনানু কিতাবুল ফিরদাউস ১৭০৯; কিতাবুল আক্বিব ১৪০)
হযরত আবু হুরায়রা (রা:) বলেন, আমি রসূল ﷺ কে বলতে শুনেছি অবশ্যই অবশ্যই পৃথিবী ততদিন ধ্বংস হবে না যতদিন না মানুষ পাঁচজন শাসকের দেখা পাবে। যারা আল্লাহর দ্বীনকে যুক্তি করে ধ্বংস করতে চাইবে। আর তারা পাঁচ শাসকই এক সাথে পৃথিবীতে উপস্থিত থাকবে। আমি (আবু হুরায়রা) বললামঃ হে আল্লাহর রসূল ﷺ! সে পাঁচজনের পরিচয় কী? তিনি বললেনঃ তাদের একজন এই পবিত্র ভূমিতে আসবে। যার নাম হবে আমার নামের মতো (মুহাম্মাদ)। সে আরবের দ্বীনকে হাস্যকর বানাবে। আর অভিশপ্ত (ইহুদী-খ্রিষ্টান) জাতিকে বন্ধু বানাবে। দ্বিতীয় সে বিশ্ব শাসক হবে। আর মুসলমানদের নিয়ে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থাকবে। তৃতীয় জন হিন্দুস্তানের বাদশা, সে বন্ধু অঞ্চলের মুসলমানদের নিয়ে ষড়যন্ত্র শুরু করবে। চতুর্থ জন, হিন্দুস্তানের দ্বিতীয় বাদশা। যে মুসলমানদের হত্যার শপথ নিয়ে শাসন ক্ষমতায় যাবে। আর মুসলিম হত্যায় সে উন্মাদ হয়ে পড়বে। পঞ্চম হলো একজন নারী শাসক, সে শাসন ক্ষমতা হাতে পেয়ে বা'আল দেবতার ইবাদত (অর্থাৎ পূর্বপুরুষদের পূজা) বৃদ্ধি করবে। আর মুশরিকদের বন্ধুরূপে গ্রহণ করবে। আর মুসলমানদের হত্যা করবে। অথচ সে হবে মুসলমান। তখন দেখবে সেখানকার দুর্গম নামক অঞ্চলের এক দুর্বল বালক তাদের ষড়যন্ত্রের সমাপ্তি ঘটাবে এবং মুমিনদের বড় বিজয় আনবে।
- (কিতাবুল আক্বিব ১৭২; আখীরুজ্জামানা আল মাহদী ফিল আলামাতিল কিয়ামাহ ১৭৫)
0 মন্তব্যসমূহ