৮.২.১ পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের নিশান ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া! হিন্দুদের জন্য চূড়ান্ত বার্তা ও অশনি সংকেত!
ভারতের পূর্ব উপকূলের উড়িষ্যা রাজ্যের পুরী জেলায় হিন্দু বা সনাতনী ধর্মাবলম্বীদের বিখ্যাত হিন্দু মন্দির ও তীর্থক্ষেত্র এই জগন্নাথ মন্দির। একে নিয়ে আছে অনেক রহস্য। কিন্তু এমন অনেক রহস্য আছে যা সাধারণ হিন্দুদেরও অজানা। এই মন্দিরের নিশান বা ধ্বজা বা পতাকা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া, বার বারই এর পতাকা উড়ে যাওয়া, ভেঙ্গে যাওয়া, আগুন লাগা এগুলো কোন কাকতালীয় ঘটনা নয়। এটিই হচ্ছে হিন্দু বা সনাতনী ধর্মাবলম্বীদের জন্য অশনি সংকেত বা চূড়ান্ত বার্তা, যে তাদের ধ্বংস নিকটে! আর এটা তাদের নিজেদের কারণেই হবে। আর মুসলিমদের জন্য কেন এই বিষয়টি জানা তাদের মতই গুরুত্বপূর্ণ তা জানার জন্য পুরো ডকুমেন্টারিটি পড়ুন।
জগন্নাথ মন্দিরের ধ্বজা কিছুদিন আগে আবার ভেঙ্গে যায়। হিসেব করে দেখা যায়, এই নিয়ে প্রায় ৪ বারেরও বেশি জগন্নাথ মন্দিরের ধ্বজা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ২০১৯ সালে ঘূর্ণিঝড় ফণী এর মাধ্যমে ধ্বজা উড়ে যায় এবং ২০২০ এও এতে আগুন লাগে। ইসলামী ধর্মগ্রন্থের কিতাবে, অর্থাৎ হাদিসে এই বিষয়টি উল্লেখ এসেছে যা আমরা ২০১৮ সালেই প্রকাশ করেছিলাম। যখন এই ঘটনা ঘটেই নি। কিন্তু তখন এই সকল হাদিসকে আলেমরাসহ অনেক মুসলিম ভাই-বোনরাই এড়িয়ে গিয়েছিল। এই বিষয়ে যে ঘটবে তার কথা হিন্দুদের ধর্ম গ্রন্থেও রয়েছে। তাতে লিখা আছে এরকম যে, জগন্নাথের ধ্বজা উড়ে যাওয়ার পাঁচ বছরের মাথায় হিন্দু জাতির ধ্বংস হবে। এটা কল্পনা বা কোন আন্দাজ নয়, ঠিক এটিই ঘটতে যাচ্ছে ভবিষ্যতে যার ব্যাপারেই আমরা সতর্ক করছি এবং যার সতর্ককারী হিসেবে আল্লাহর মনোনীত বান্দা এবং এই শতাব্দীর মুজাদ্দিদ ইমাম মাহমুদ হাবীবুল্লাহ এর আগমন হয়েছে। আমাদের এই ডকুমেন্টারিটি মনোযোগ দিয়ে পড়লে এই বিষয়ে অনেক রহস্য সম্পর্কে জানতে পারবেন ইংশাআল্লাহ। এটি মুসলিমদের জন্য যেমন গুরুত্বপূর্ণ তেমনি হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের জন্যও। তাই অবশ্যই এটির সবার কাছে পৌঁছানো সকলের দায়িত্ব।
এই ডকুমেন্টারীতে যে বিষয়গুলো আলোচনা করা হবে তা সংক্ষেপে উল্লেখ করছিঃ
১। পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের নিশান বা ধ্বজা এই নিয়ে কতবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে? কবে এবং কিভাবে।
২। পুরী মন্দিরের নিশান বা ধ্বজা উড়ে যাওয়া। এটি কি আসলেই হিন্দুদের জন্য কোন অশনি সংকেত বহন করছে?
৩। ইতিহাসে এরকম আগে ঘটেছে কি? ইতিহাসে কিরকম ঘটেছে তার কিছু উদাহরণ।
৪। হিন্দু ধর্মগুরুরা এই বিষয়ে কি বলে?
৫। এটি অশনি সংকেত বহন করে এবং অশুভ শক্তির জন্ম হয়েছে। এটা কতটুকু সঠিক বা যৌক্তিক?
৬। হাদিসে কি বলা হয়েছে এই ব্যাপারে? হাদিস অনুযায়ী ভবিষ্যতে কি ঘটতে যাচ্ছে?
৭। হিন্দু সনাতনী ধর্মাবলম্বীদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ উপদেশ।
আমরা মূল আলোচনা শেষ করেই পয়েন্টগুলো নিয়ে আলোচনা শুরু করবো।
মূল আলোচনাঃ
জগন্নাথ মন্দির যাকে পুরী মন্দিরও বলা হয়, উড়িষ্যার পুরী উপকূলীয় অঞ্চলে অবস্থানের কারণে। এটি একটি বিখ্যাত হিন্দু মন্দির। এই মন্দিরটি ওড়িশা বা উড়িষ্যার পুরী জেলাতে পূর্ব সমুদ্র সৈকতে অবস্থিত। এই মন্দিরটি একটি বিখ্যাত হিন্দু তীর্থক্ষেত্র বিশেষ করে বিষ্ণু ও কৃষ্ণ উপাসকদের নিকট। এটি চারধামের অন্যতম যেখানে সকল ধার্মিক হিন্দুরা জীবনে অন্তত একবার যেতে চান।
এই মন্দিরের যেমন গুরুত্ব রয়েছে হিন্দুদের কাছে তেমনি এর ধ্বজা নিয়েও রয়েছে অনেক কাহিনী। ইতিহাস অনুযায়ী মন্দিরের ধ্বজা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। যা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া যাবে না এবং এই কারণে এটির রক্ষণাবেক্ষণ পর্যাপ্তভাবে করা হয়। হিন্দু গুরুদের দাবি এটি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া মানে তাদের দেবতা রাগান্বিত হয়ে যাওয়া এবং দেবতার আশীর্বাদ চলে যাওয়া, দেবতা পরাজিত হওয়া সহ বিভিন্ন অশনি সংকেত বহন করে। কিন্তু এটি যে আসলেই তাদের জন্য অশনি সংকেত বহন করবে তা কতজনই বা জানতো! এই ধ্বজা যেভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করা হয় তাতে এটি সহজে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া বা ভেঙ্গে যাওয়ার কোন প্রশ্নই উঠে না এটা সেই মন্দিরের কর্মকর্তাদের জোর একটি দাবি। কিন্তু এরপরও বার বার ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে জগন্নাথ মন্দিরের ধ্বজা। হাদিসে এটি স্পষ্টভাবে উল্লেখ এসেছে যে এই আলামতটি বা নিদর্শনটি কি ইঙ্গিত বহন করে। আমরা সেই হাদিসটির পূর্ণ ব্যাখ্যা এই এখানে দেওয়ার চেষ্টা করবো এবং হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের করনীয় সম্পর্কে খুবই গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিবো।
১। পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের নিশান বা ধ্বজা এই নিয়ে কতবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে? কবে এবং কিভাবে।
হিন্দু গুরুদের দাবি মতে মন্দিরটি আটশো থেকে হাজার বছর ধরে এভাবেই চলে আসছে। কিন্তু ২০১৯ সালের মে মাসে ফণী ঘূর্ণিঝড় শুরুর কিছু আগে অল্প বাতাসে ধ্বজা উড়ে যাওয়া এবং নতুন করে লাগানোর পরের দিন আবারো ধ্বজা উড়ে যাওয়ার যে ঘটনা ঘটে তা আগে কখনই হয়নি। এবং এরপর থেকে ২০২০ সালের মার্চ মাসে ধ্বজাতে আগুন লাগে। তার কিছু মাস পর, মে মাসে আম্পান ঘূর্ণিঝড় আসার কিছু আগে অল্প বাতাসে ধ্বজা আবারো উড়ে যায় যা আগের বছরের মতই ঘটেছে। এরপর কিছুদিন আগে ২০২১ সালের মে মাসে তাউতে নামক ঘূর্ণিঝড় হওয়ার কিছুদিন আগে ধ্বজার বাশই ভেঙ্গে যায়। এছাড়াও হিন্দু গুরুরা বলেছে যে এর চূড়ায় কোন পাখি বসে না, কিন্তু এবার সেটিও বসেছে এবং এতে আবারো অসুদ্ধ হয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয় বলে বলতে শোনা যায়।
২। পুরী মন্দিরের নিশান বা ধ্বজা উড়ে যাওয়া। এটি কি আসলেই হিন্দুদের জন্য কোন অশনি সংকেত বহন করছে?
পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের ধ্বজা উড়ে যাওয়া আসলেই তাদের জন্য একটি অশনি সংকেত বহন করে। তাদের হিন্দু ধর্মগ্রন্থেও এটি স্পষ্টভাবেই উল্লেখ রয়েছে। আর হাদিসও এই বিষয়টি উল্লেখ পাওয়া যায় যা এর গুরুত্ব বুঝাতে লিখিত হয়েছে। এমনকি অনলাইনে বিভিন্ন ভিডিওতে হিন্দুদের অন্যতম শ্রদ্ধেয় গুরু শ্যামা ক্ষ্যাপা সেও বলেছে। পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের ধ্বজা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া একটি সংকেত বা আলামত বহন করে। এটি তাদের অশনি সংকেত অনুযায়ী তাদের ধর্মের বিলুপ্তিকে নির্দেশ করে। আর ইসলাম ধর্মের হাদিসের কিতাবেও একই বিষয় পাওয়া যায়। এটি সত্য যে ২০২৫ এর পর হিন্দু ধর্ম বা জাতি বলতে কিছু থাকবে না। ইমাম মাহদী এর আগমন হতে আর কিছু সাল মাত্র বাকি। তার সময়ে শুধু মাত্র দুইটি ধর্ম বা জাতি থাকবে। সেই দুটি হচ্ছে ইহুদী ও খ্রিষ্টান জাতি। ইমাম মাহদীর যে আগমন সত্য তা হিন্দু পণ্ডিতরাও মেনে নিতে বাধ্য। কি কারণে তাদের বিলুপ্তি হবে, তাদের কোন্ কার্যক্রমের জন্য হবে তা জানানোর আগে আমরা ইতিহাস থেকে কিছু ঠিক একই রকম নিদর্শন আলোচনা করবো।
৩। ইতিহাসে এরকম আগে ঘটেছিল কি? ইতিহাসে কিরকম ঘটেছে তার কিছু উদাহরণ।
ইতিহাস দেখলে আমরা এরকম অনেক অলৌকিক বিষয় বা নিদর্শন পাবো যা দ্বারা অনেক ইঙ্গিত আগে থেকেই দেওয়া হয়েছে। এমনকি অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের সময় আকাশে আলামতও প্রকাশ পেয়েছে। আর কিছু হয়েছে বিধর্মীদের কোন বড় ক্ষতির মাধ্যমে। আমরা কিছু উদাহরণ এখানে দিবো।
১। ইবরাহীম (আঃ) এর জন্মের সময়ঃ ইবরাহীম (আঃ) এর যখন জন্ম হয় তখন পৃথিবীতে একক রাজ করতো নমরুদ যে নিজেই নিজের প্রভুত্ব ঘোষণা করেছিল। একদিন তাকে একজন জ্যোতিষী বলল, হুজুর জাহাপনা! আমরা আজকে পূর্বদিক থেকে উদীয়মান একটি নক্ষত্র দেখেছি, যা আমরা কোনদিন আর দেখি নি। এ নক্ষত্রটি যে অশুভ ইঙ্গিত বহন করছে তাতে সন্দেহ নেই। নমরুদ জ্যোতিষীদের কথা শুনে বলল, সে নক্ষত্রটি কিরূপ এবং উহা কি অশুভ বয়ে আনতে পারে? জ্যোতিষী বলল, জাহাপনা! নক্ষত্রটি প্রমাণ করছে যে, আগামী দু’তিন দিনের মধ্যে এক পিতার বীর্য মাতৃগর্ভে প্রবেশ করবে। সে বীর্যে এমন এক সন্তান সৃষ্টি হবে যিনি আপনার রাজ্য ধ্বংস করবে, আপনার খোদায়ী দাবি অসার করে দিবে। এটি জানার পর নমরুদ অনেকভাবে চেষ্টা করেও এটি আটকাতে পারে নি আর ইবরাহীম (আঃ) এর জন্ম হলো। এখানে তার জন্মের আগেই জ্যোতিষীরা বুঝতে পেরেছিল যে এরকম কিছু হবে। আর তারা আকাশে এর আলামত পেয়েছিল।
২। ইউসুফ (আঃ) এর জন্মের সময়ঃ ইউসুফ (আঃ) এর জন্মের সময়কালে সেখানেও মূর্তি পূজা চলত। ইয়াকুব (আঃ) সেখানে নবী হিসেবে দাওয়াতি কাজ করতেন। সেখানে ইস্তার বা ইশ্তার/ইশতার নামক দেবতার পূজা করা হতো যাকে ইশ্তারের দেবতা বলা হতো। আর সেখানে একটি মন্দির ছিল যাকে ইশতারের মন্দির বা ইশ্তারের দেবতার মন্দির বলা হতো। সেই মন্দিরে একটি জায়গায় আগুনও রাখা হতো যা সব সময় জলন্ত অবস্থায় থাকতো। ইউসুফ (আঃ) এর জন্মের সময়কালে সেখানে অনাবৃষ্টি ছিল ও দুর্ভিক্ষের ছাপ পড়েছিল যার কারণ হিসেবে বলেছিল যে সেটি ইশতারের অভিশাপ ইয়াকুব (আঃ) এর উপর। ইয়াকুব (আঃ) এর পুত্র ইউসুফ (আঃ) এর জন্ম যেদিন হয় সেদিন সেই ইশ্তারের মন্দিরে আগুন লেগে যায়, সেই মূর্তি মাটিতে পড়ে যায় আর সেই আগুনে ইশ্তার মন্দিরের জাদুকর নারী পুড়ে মারা যায় ও মন্দিরের সবকিছু ধ্বংস হয়ে যায়। এবং আল্লাহর রহমত হিসেবে সেদিন বৃষ্টিবর্ষণ হয় ও সেই মন্দিরের লোকদের বলা দুর্ভিক্ষের কথাও মিথ্যা প্রমানিত হয়। আর তখন সবাই দলে দলে ইয়াকুব (আঃ) এর দ্বীন তথা ইসলাম মেনে নেয়। আল্লাহ ইউসুফ (আঃ) এর জন্মের সময়কালেও এরকম নিদর্শন দেখানোর ফলেই তারা দ্বীনে প্রবেশ করে।
৩। মূসা (আঃ) এর জন্মের সময়ঃ ফেরাউন যখন স্বপ্নে দেখলেন যে, বনী-ইসরাঈল বংশে জন্মগ্রহণকারী এক পুত্র সন্তান কর্তৃক তিনি বিতাড়িত হবেন। তার রাজত্বের অবসান ঘটবে এবং তার প্রবর্তিত দ্বীনের পরিবর্তন হবে। তখন তিনি তার পরিষদবর্গকে এ বিষয় অবিহত করলেন এবং এর ব্যাখ্যা জানতে চাইলেন। তাদের স্বপ্নের ব্যাখার ভিত্তিতে ফেরাউন শঙ্কিত হয় এবং তার প্রতিকার হিসেবে তিনি ফরমান জারি করেন যে, বনী-ইসরাঈলের কোন নবজাতক পুত্র সন্তান জন্মগ্রহণ করলেই যেন তাকে হত্যা করা হয়। প্রতিটি সন্তান-সম্ভবা মায়ের প্রতি যেন নজরদারী রাখা হয়। কিন্তু এরপরেও মূসা (আঃ) এর জন্ম হওয়া আটকাতে পারে নি। এই রসূল এর জন্মের আগেও তাহলে আলামত এসেছিল স্বপ্ন যোগে।
৪। ঈসা (আঃ) এর জন্মের সময়ঃ হযরত ঈসা (আঃ) যখন ভূমিষ্ঠ হন তখন পূর্ব ও পশ্চিমের সমস্ত মূর্তি ভেঙ্গে পড়ে যায়। ফলে শয়তানরা অত্যন্ত বিচলিত হয়ে পড়ে। এর কোন কারণ তারা খুঁজে পাচ্ছিল না। অবশেষে বড় ইবলীস তাদেরকে জানাল যে, ঈসা (আ)-এর জন্ম হয়েছে। শয়তানরা শিশু ঈসাকে তার মায়ের কোলে আর চারদিকে ফেরেশতাগণ দাঁড়িয়ে তাকে ঘিরে রেখেছেন দেখতে পেল। তারা আকাশে উদিত একটি বিরাট নক্ষত্রও দেখতে পেল। পারস্য সম্রাট এই নক্ষত্র দেখে শংকিত হয়ে পড়েন এবং জ্যোতিষীদের নিকট এর উদিত হওয়ার কারণ জিজ্ঞাসা করেন। জ্যোতিষীরা জানাল, পৃথিবীতে এক মহান ব্যক্তির জন্ম হয়েছে। এজন্য এই নক্ষত্র উদিত হয়েছে। তখন পারস্য সম্রাট উপটৌকন হিসেবে স্বর্ণ, চান্দি ও কিছু লুব্বান দিয়ে নবজাতকের সন্ধানে কতিপয় দূত প্রেরণ করেন। দূতগণ সিরিয়ায় এসে পৌছে। সিরিয়ার বাদশাহ তাদের আগমনের উদ্দেশ্য সম্পর্কে জিজ্ঞেস করেন। তারা উক্ত নক্ষত্র ও জ্যোতিষীদের মন্তব্যের কথা তাকে জানায়। বাদশাহ দূতদের নিকট নক্ষত্রটির উদয়কাল সম্পর্কে জিজ্ঞেস করেন। উত্তর শুনে তিনি বুঝলেন, ঐ শিশুটি বায়তুল মুকাদ্দাসে জন্ম গ্রহণকারী মারিয়াম পুত্র ঈসা। এখানেও একটি বড় নিদর্শন হয় যা জমিনে ও আকাশে দুই জায়গাতেই দেখা দিয়েছে। আর তার জন্ম যে আরো বড় অলৌকিক বিষয় ছিল তা ইতিহাস পড়লেই জানতে পারবেন।
৫। আমাদের শেষ নবী মুহাম্মাদ ﷺ এর জন্মের সময়ঃ তার আগমনের সময় এত এত অলৌকিক বিষয় ঘটেছে যা আর কোন নবীর সময়ে হয়নি। তার কিছু বর্ণনা করছি মাত্র-
§ ক. হযরত সাদিক্ব (রহ:) বলেছেন, শয়তান বা ইবলিস অতীতে সপ্তম আকাশ পর্যন্ত যেতে পারত। অদৃশ্য বিষয় সম্পর্কে জানার জন্য সে সপ্তম আকাশ পর্যন্ত যেত। কিন্তু হজরত ঈসা (আ.) এর জন্মের পর থেকে চতুর্থ আকাশের ওপরে ওঠা তার জন্য নিষিদ্ধ হয়ে যায়। এরপর যখন বিশ্বনবী ﷺ জন্ম নেন তখন তার জন্য সব আকাশই নিষিদ্ধ হয়ে যায়। শয়তানকে আকাশের দরজাগুলো থেকে ধূমকেতু দিয়ে বিতাড়ন করা হয়।
§ খ. যে ভোর বেলায় মহানবী ﷺ জন্ম নেন, সেদিন বিশ্বের সবগুলো মূর্তি মাটির দিকে নত হয়ে পড়ে।
§ গ. সেদিন পারস্যের রাজার বিশাল প্রাসাদের বারান্দা কেঁপে ওঠে এবং ছাদের ১৪টি প্রাচীর ধ্বসে পড়ে।
§ ঘ. সেদিন পারস্যের সভে অঞ্চলের হ্রদটি তলিয়ে শুকিয়ে যায়। বহু বছর ধরে এই হ্রদকে পূজা করা হত।
§ ঙ. সামাভে অঞ্চলে (কুফা ও সিরিয়ার মধ্যবর্তী) পানির প্রবাহ শুরু হয়। অথচ এর আগে বহু বছর ধরে সেখানে কেউ পানি দেখেনি।
§ চ. পারস্যের শিরাজ শহর সংলগ্ন অগ্নি উপাসনালয়ের আগুন সেই রাতে নিভে যায়। অথচ ওই আগুন এক হাজার বছর পর্যন্ত প্রজ্বলিত ছিল।
§ ছ. সেই রাতে হিজাজ বা বর্তমান সৌদি আরব থেকে একটি আলো দৃশ্যমান হয় এবং তা পূর্বাঞ্চলসহ সারা বিশ্বের ছড়িয়ে পড়ে।
এই সকল ঘটনা আজকে ইতিহাসের পাতায় লেখা রয়েছে যে নবীদের সময়ে কিভাবে মূর্তি, মূর্তি পূজারীদের ও মন্দিরের ইত্যাদির বিভিন্ন ক্ষতিসাধন হয়েছে ও তাদের বিশ্বাসে আঘাত হেনেছে যা তাদের পতনের আগেই ভয় পাইয়ে দিয়েছে। আর এই জামানাতে মুজাদ্দিদ এর আগমন হয়েছে। সামনেই রয়েছে ইমাম মাহদী এর আগমন। আর মূর্তি পূজারীদের জন্য একটি সংকেত বা সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছে সেই ইতিহাসের নবী-রসূলের জন্মের সময় যেমন হয়েছিল। ঠিক যেমন ইবরাহীম (আঃ) নবীর সময়ের নমরুদের জ্যোতিষীরা বুঝতে পেরেছিল, ঠিক যেমন মূসা (আঃ) এর সময়ের ফিরাউনও বুঝতে পেরেছিল, ঠিক যেমন ঈসা (আঃ) এর জন্মের আগেই আকাশে আলামত দেখে বুঝতে পেরেছিল আর পুরীর জগন্নাথ মন্দির ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া ঠিক তেমনই একটি ইঙ্গিত বহন করে। এটা কাকতালীয় কোন বিষয় না। হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা এটা ভালো করেই জানে যে এই ইঙ্গিত সাধারণ কোন ইঙ্গিত বহন করে না। তাদের কিতাবেই এই ব্যাপারে আগে থেকে বলা রয়েছে। এ বিষয়ে হিন্দু ধর্মগুরুদের কিছু কথা শুনলেও তা খুব ভালো ভাবেই আন্দাজ করা যায়।
৪। হিন্দু ধর্মগুরুরা এই বিষয়ে কি বলে?
সাধারণ সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে বেশির ভাগরাই তাদের হিন্দু পণ্ডিতদের কথা শুনে থাকে। তারাও এই বিষয়ে মুখ খুলেছে যে মন্দিরের এরকম বার বার ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া এটা সামনে খুবই মারাত্মক বিপদের লক্ষণ। সামনে কি হতে যাচ্ছে সেটা তারা জেনেও বলছে না নাকি আসলেই জানে না তা স্পষ্ট হতে পারিনি। তবে তারা কি বলে সেটা একটু খেয়াল করলে দেখা যায়, শ্রী শ্রী শ্যামা ক্ষ্যাপা বলেন, “আমি কুরআন-হাদিস পড়েছি, বাইবেল পড়েছি। তাতে বলা আছে আল্লাহর দূত আসবে, মাহদী আসবে, এগুলো মিথ্যে কিছু বলছে নাতো!” অন্য এক ভিডিওতে বলতে দেখা যায় তাকে- “সামনে অনেক বড় কিছু আসতে চলেছে। করোনা তো কিছুই না, সামনে কোটি কোটি মানুষ মারা যাবে, কেউ থামাতে পারবে না।” এই বিষয়ে অনলাইনের ভিডিওটি দেখলে আরো জানতে পারবেন ইনশাআল্লাহ। ইউটিউবে দেখতে সার্চ করুন- “পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের নিশান ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া! হিন্দুদের জন্য অশনি সংকেত! ডকুমেন্টারি”।
৫। এটি অশনি সংকেত বহন করে এবং অশুভ শক্তির জন্ম হয়েছে। এটা কতটুকু সঠিক বা যৌক্তিক?
‘ফণী’ ঝড় ও পৌত্তলিকদের (ভারতের) পরাজয়সূচক লক্ষণ। (২মে, ২০১৯)
মুহম্মদ বিন কাসিম রহমতুল্লাহি আলাইহি যখন সিন্ধু অবরোধ করেছিলেন, তখন তিনি পৌত্তলিকদের এক কুসংস্কার সম্পর্কে অবগত হন। এক ব্রাহ্মণ পুরোহিত তাকে তথ্য দেয়, তাদের প্রধান মন্দিরের পতাকার নীচে একটি মন্ত্রধারী কবচ ঝোলানো রয়েছে। হিন্দুরা বিশ্বাস করত, যতোদিন সেই কবচ ও পতাকা অক্ষত থাকবে, তাদেরকে কেউ হারাতে পারবে না।
তখন মুহম্মদ বিন কাসিম রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার নির্দেশ মোতাবেক গোলন্দাজ বাহিনীর প্রধান গোলা ছুঁড়ে ঐ মন্দিরের চূঁড়াটি ধ্বংস করে দিতে সক্ষম হন। এর তিনদিনের মধ্যেই হিন্দুদের পরাজয় ঘটে।
মূলত দ্বীন ইসলামের নির্দেশ এটাই, পৌত্তলিকদের বিশ্বাসের মূলে আঘাত করে তাদেরকে পরাজিত করা। হুযূর পাক ﷺ উনার দুনিয়ায় আগমনের সময়ে যেসব মুজিযা সংঘটিত হয়েছিল, তার অন্যতম একটি হলো পারস্যের প্রধান অগ্নি মন্দিরের আগুন নিভে যাওয়া। পারসিকরা এক হাজার বছর ধরে সেই আগুন প্রজ্জলিত রেখেছিল, তা নিভে যাওয়ায় তাদের মধ্যে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়। পরবর্তীতে মুসলমানদের হাতেই পারস্যের অগ্নি উপাসক সম্প্রদায় এর পতন ঘটে।
সম্প্রতি ‘ফণী’ ঝড়টির মূল লক্ষ্যবস্তু হলো ভারতের উড়িষ্যার ‘পুরী’ এলাকাটি, যা কিনা হিন্দুদের তীর্থস্থান। ওখানে হিন্দুদের প্রধান ‘জগন্নাথ মন্দির’, সেখানে একটি পতাকাকে তারা শুভ-অশুভের নিয়ামক হিসেবে মনে করে। ‘ফণী’ ঝড়ে সেই পতাকা যেন উড়ে বা ছিঁড়ে না যায়, সে জন্য তারা ১২ হাত পতাকার মাপ ছোট করে ৫ হাত করে। কিন্তু তারপরও তাদের সেই পতাকা উড়ে যায়।
মূলত গাযওয়ায়ে হিন্দের সূচনাকালে এরকম অনেক ঘটনাই সংঘটিত হতে দেখা যাবে। পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের ধ্বজা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া হিন্দুদের জন্য অনেক বড় একটি অশনি সংকেত তো বটেই তার সাথে হিন্দুদের বিশ্বাসে এক বড় আঘাত এসেছে। সাধারণ দৃষ্টিতে একটি সামান্য পতাকা উড়ে যাওয়া, যেটি বার বারই হচ্ছে তা তেমন কিছু ইঙ্গিত না বুঝালেও এটি তাদের ধর্মেই একটি অলৌকিক আঘাত। যেমনটা হয়েছিল ইতিহাসে আগেও বারংবার। তারা এটি যেভাবেই ব্যাখ্যা করুক এর আসল ব্যাখ্যা এই যে, এটি তাদের জন্য আগাম বার্তা যে তাদের পরাজয় নিকটে। তারা পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের পতাকা উড়ে যাওয়াকে অশনি সংকেত বলে আর বলে অশুভ শক্তির জন্ম হয়েছে। না, বরং শুভ শক্তির জন্ম হয়েছে, শুভ শক্তির বেলায়েত এসেছে। খুব দ্রুতই হিন্দু জাতির পরাজয় আসছে আর এটি হচ্ছে সেই সংকেত যাকে তারা অশুভ সংকেত বলে। এটি মুসলিম জাতির জন্য একটি শুভ সংকেত। আমরা জানি যে প্রতি শতাব্দীতে একজন মুজাদ্দিদের আগমন হবে, তাছাড়াও খলীফা মাহদীর আবির্ভাবও খুবই নিকটে। আর বিভিন্ন হাদিসের সূত্র, শাহ্ নিয়ামাতুল্লাহ এর কাসিদা ও আশ-শাহরান এর আগামী কথনের ভবিষ্যৎবাণী থেকে একই বিষয় পাওয়া যায় যে হিন্দু জাতির এক বড় পরাজয় সামনে অপেক্ষা করছে। হিন্দু জাতির ইতি খুব সামনেই হবে। এর মূল কারণ যদি ব্যাখ্যা করা হয় তাহলে দেখা যায় হিন্দুদের নিজেদের কারণেই তাদের জাতির ধ্বংস হবে। এটি লেকচারে আগেও ব্যাখ্যা করা হয়েছে। যারা হিন্দু রয়েছে তাদেরও উচিত শাহ্ নিয়ামাতুল্লাহ এর কাসিদা ও আশ-শাহ্রান এর আগামী কথন নামক কবিতা দুটি পড়া যাতে যারা আগামীতে কি হতে যাচ্ছে বা কি হতে পারে তা সম্পর্কে জানতে পারে।
এখন একটি বিষয় সামনে আসে যে হিন্দু জাতির ধ্বংস কেন হবে? তাদের কোন কার্যক্রমের মাধ্যমে হবে। তাদের দোষ কি? এই বিষয়টি হয়তো সকল হিন্দুরা মেনে নিবে না কিন্তু যারা উপদেশ গ্রহণ করে তারাই সঠিক পথ ও পন্থা খুঁজে পায়। হিন্দুদের কাছে ক্ষমতা গিয়েছে তার মাত্র একশত বছরও হয় নি। তারা তাদের ধর্মকে পুজি করে উগ্রতা ছড়িয়ে যাচ্ছে। তারা তাদের ধর্মকে ঠিক মত মানেই না, তাদের মনগড়া কিছু নিয়ম বানিয়ে বলছে যে এটা তাদের ধর্ম আর সেই মোতাবেক চলছে। তারা একবারও দেখে না যে তারা যেটা করছে, তারা যা মানছে তা কি তাদের ধর্মগ্রন্থে আছে কিনা। একবারের জন্যও তা দেখে না। যদি এক কথায় বলি তা হচ্ছে তারা তাদের ধর্মকে নামে মাত্র অনুসরণ করে, সঠিকভাবে অনুসরণ করে না। তারা এখন উঠে পড়ে লেগেছে মুসলিমদের হত্যা করে রামরাজ্য কায়েম করার জন্য। অনেক ভিডিওতে দেখা গিয়েছে যে গরুর গোস্ত খাওয়ার অপরাধে মানুষকে পিটিয়ে মেরে ফেলছে। শুধু মাত্র ইসলামী নাম হওয়ায়, মুসলিম হওয়ায় গুলি করছে প্রকাশ্যে। পুরো পৃথিবীর মত তারাও গভীর ষড়যন্ত্রে আছে যে কিভাবে মুসলিমদের মেরে ইসলামকে নিশ্চিহ্ন করা যায়। অন্য সকল ধর্ম এই দিক দিয়ে একজোট হয়েছে যে কিভাবে ইসলামকে দমানো যায়। এরই এক উপায় হিসেবে হিন্দু জাতিও এখন মুসলিমদের মারার নেশায় মক্ত হয়ে রয়েছে। এ থেকে একটি বিষয়ই প্রমানিত হয় যে ইসলাম ধর্মই সঠিক। একটি উদাহরণ দিয়েই বুঝাবো যে হিন্দুদের আসলেই কেন বা কোন কার্যক্রমের জন্য ধ্বংস অনিবার্য। জম্মু-কাশ্মীর ইস্যু। সেখানে কেন হিন্দুরা নতুন নতুন আইন পাশ করে জোর-জবরদস্তী করে জমি দখল করতে চাইছে? সেটা মুসলিমদের একটা অঞ্চল বলে? কেন হিন্দু নেতারা বলছে কাশ্মীরি মেয়েদের ধর্ষণ করো, তাদের বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দিতে? সেখানে কোন কারণে তাদের সাথে যুদ্ধ করছে? সেখানে কেন গণহত্যা চালাচ্ছে? কাশ্মীর কি ভারত দখল করতে চেয়েছিল? নাকি ইসলামী রাজ্য কায়েম করতে লেগেছিল? দোষ কার? গুজরাটে গণহত্যা করেছিল মোদী কি কারণে? সিএএ, এনআরসি ও ক্যাব এগুলো কি কারণে প্রতিষ্ঠা করেছে? এগুলোর সব উত্তর হিন্দু বিজেপি নেতারা বলে দিয়েছে তা হচ্ছে তারা অখণ্ড ভারত চায়, মুসলিমদের হত্যা করে ইসলাম ধর্মকে মিটিয়ে দিয়ে একটি রাম রাজত্ব কায়েম করবে। এজন্য তারা উগ্রতার সকল সীমা পার করে গিয়েছে। তারা সীমালঙ্ঘন করে ফেলেছে। আর এরকম সীমালঙ্ঘন জাতি তা হিন্দু হোক, খ্রিষ্টান বা ইহুদী হোক সবাই তাদের প্রাপ্য বুঝে পাবে। আর সেই প্রাপ্য সর্বপ্রথমে হিন্দু জাতিরাই বুঝে পাবে। এর কারণ তারা সামনেই তাদের উগ্রতা আবার শুরু করবে। মুসলিম হত্যায় মেতে উঠবে। বাংলাদেশকে দখল করার কাজ প্রায় শেষ, এখন সেখানে বিভিন্ন ষড়যন্ত্র করার জন্য হিন্দু ঐক্য জোট, ইসকন ইত্যাদি দল কাজ করছে আর মুসলিমদেরকে ধ্বংস করার জন্য সব কিছু করছে। এই সকল সীমালঙ্ঘনকারী জাতি কোন সময় পৃথিবীতে প্রতিষ্ঠিত হতে পারে নি আর কখনো পারবেও না। সামনে যদি এই সকল কারণে হিন্দু জাতির ধ্বংস হয়ে থাকে তাহলে তা যথার্থই হবে। তারাই প্রথমে এই ধ্বংসলীলা শুরু করবে যা হাদিস থেকে পাওয়া যায়। আর তারা নিজেদের কর্মের কারণেই ধ্বংস হবে। হিন্দু জাতি মাত্র কিছুদিন হলো ক্ষমতা পেয়েছে, এর মধ্যেই তারা মুসলিমদের নিঃশেষ করতে উঠে পরে লেগেছে। এগুলোর ফল দুনিয়া ও আখিরাতে অবশ্যই পাবে। আর দুনিয়াতে ফল হচ্ছে এই হিন্দু জাতির নিঃশেষ যা আরো আগে থেকেই ভবিষ্যৎবাণী করা। এই ভবিষ্যৎবাণী শুধু ইসলাম ধর্মের হাদিসে নয়, হিন্দু ধর্মগ্রন্থেও রয়েছে। সেই ভবিষ্যৎবাণীটি হচ্ছে এই যে, মন্দির ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ৫ বছরের মাথায় তাদের চূড়ান্ত পরাজয় ঘটবে। যদি হিসেব করা হয় ২০১৯ এর মে মাস থেকে তা দাড়ায় ২০২৪ সালের মে মাস। ২০২৪ সালটি বা তার আগে মুজাদ্দিদ আগমনেরও একটি সম্ভাব্য সময় হাদিস অনুসারে। অর্থাৎ দেখা যায় সব সূত্রই একে একে মিলে যাচ্ছে। হিন্দু জাতি কর্তৃক যে বর্বরতা ও নির্যাতন শুরু হয়েছে তার মোকাবিলা করতে একজন নেতাকে আল্লাহ পাঠাবেন এই সময়ে বা কিছু আগেই যাতে সাধারণ মুসলিমরা তার মাধ্যমে হিন্দু জাতিদের পরাজিত করতে পারে আর তাদের বর্বরতা ও অত্যাচার-নির্যাতন রুখতে পারে। শাহ্ নিয়ামাতুল্লাহ (রহ:) কাসিদাতে হাবীবুল্লাহ নামক এক ব্যক্তির কথা বলা হয়েছে যার আগমন হবে মাহদীর আগমনের আগেই। তিনিই মুসলিমদের এই বিপদের সময় নেতৃত্ব দিবেন। আর হাদিসে বলেছে মুমিনরাই বিজয়ী হবে তাদের মোকাবিলায়।
৬। হাদিসে কি বলা হয়েছে এই ব্যাপারে? হাদিস অনুযায়ী ভবিষ্যতে কি ঘটতে যাচ্ছে?
হযরত হুযাইফা (রা:) বলেন, আমি আল্লাহর রছুল ﷺ কে বলতে শুনেছি, মানুষের জীবনে এমন একটি সময় আসবে, যখন তারা বছরে দু এক বার বিপর্যস্ত হবে! যার একটি শুরু হবে বায়ু দ্বারা! যা মুশরিকদের দূর্গ ক্ষতিগ্রস্তের মাধ্যমে! (প্রয়োজনীয় অংশ)
- (আখীরুজ্জামানা আল মাহাদী ফিল আলামাতিল কিয়ামাহ ১১৯)
হাদিসের বাকি অংশ পরে ব্যাখ্যা করছি। এই হাদিসের প্রথম অংশে উল্লেখ এসেছে যে মানুষের জীবনে এমন একটি সময় আসবে যখন তারা বছরে দু এক বার বিপর্যস্ত হবে। বছরে দু এক বার বিপর্যস্ত হবে এর সঠিক ব্যাখ্যাটি না জানলেও সহজেই বলা যায় এটি হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ তা ঘূর্ণিঝড়, বন্যা, খরা, ভূমিকম্প সবই হতে পারে। একটি বিষয় লক্ষণীয় যে গত কিছু বছর ধরে প্রাকৃতিক দুর্যোগগুলো বেশি হচ্ছে এবং আগের থেকে সব সময়ই বেশি বড় আকারের হচ্ছে যা দিয়ে আরো বেশি ক্ষতির সম্মুখীন হতে হচ্ছে। বন্যা, ঝড়, খরা, শীত ও প্রচণ্ড গরম আবহাওয়া ইত্যাদি পূর্বের সকল রেকর্ড ভেঙ্গে ফেলছে যা নিউজ পড়লে জানা যায়। দেখা যায় যে পুরী জগন্নাথ মন্দিরের পতাকা প্রথমবার যে উড়ে যায় ২০১৯ সালে মে মাসে তখন একটি বড় ঘূর্ণিঝড় এর আগমন হয় যার নাম দেওয়া হয়েছিল ফণী। এই ফণী ঝড়টি হওয়ার আগেই কিন্তু মুশরিকদের দুর্গটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আর এরপরই সেই ফণী ঝড়টি আঘাত হানে এবং তাতে অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়। হাদিসের সাথে একদমই মিলে যায় বিষয়টি। হাদিসের পরবর্তী অংশও খুবই গুরুত্বপূর্ণ। পুরোটি আবারো উল্লেখ করলাম-
হযরত হুযাইফা (রা:) বলেন, আমি আল্লাহর রসূল ﷺ কে বলতে শুনেছি, মানুষের জীবনে এমন একটি সময় আসবে, যখন তারা বছরে দু এক বার বিপর্যস্ত হবে! যার একটি শুরু হবে বায়ু দ্বারা যা মুশরিকদের দূর্গ ক্ষতিগ্রস্তের মাধ্যমে! আর শেষ হবে দুর্ভিক্ষের মাধ্যমে। আর এই দুর্ভিক্ষ শেষ হতেই মুশরিকরা একটি ফিতনা সৃষ্টি করবে! যার মুকাবিলা করার জন্য হিন্দুস্তানের পূর্ব অঞ্চল থেকে একদল মুসলিম ধাবিত হবে। কিন্তু মুশরিকরা তাদের এমন ভাবে হত্যা করবে যেমন ভাবে তোমরা এক নির্দিষ্ট দিনে (কুরবানীর দিন) পশুগুলোর উপর আল্লাহর নাম স্মরণ করো! ফলে তারা পরাজিত হবে। অনুরূপ আরেকটি মুসলিম দল মুশরিকদের দিকে ধাবিত হবে (মুকাবিলা করতে)। তাদের সাথে আল্লাহর সাহায্য থাকবে। তারাই বিজয়ী। একথা তিনি (রসূল ﷺ) তিন বার বললেন। অতঃপর বললেন, তাদের নেতা হবে দুর্বল! আহ্ প্রথম দলটির জন্য কতইনা উত্তম হতো যদি তারা তাদের নেতাকে গ্রহণ করতো! আমি বললাম, হে আল্লাহর রসূল ﷺ! তারা তাদের নেতাকে গ্রহণ করবে না কেন? তিনি ﷺ বললেন, কেননা তারা সে সময় নিজেরাই নিজেদের যোগ্য মনে করবে!
- (আখীরুজ্জামানা আল মাহাদী ফিল আলামাতিল কিয়ামাহ ১১৯)
হাদিসটি থেকে পাওয়া যায়, বছরে যে দু এক বার বিপর্যস্ত হবে তা শেষ হবে দুর্ভিক্ষের মাধ্যমে। ২০১৯ সালের সেই শুরু থেকে এখন ২০২১ সাল চলছে আর আমরা এখনই বুঝতে পারছি যে সামনেই একটি বড় দুর্ভিক্ষ আসতে চলেছে। এখন থেকেই তা বুঝা যাচ্ছে। তবে জুলফি তারকা উদয় এর পরই মূল দুর্ভিক্ষ শুরু হবে যা আমাদের অন্য একটি আলোচনাতে বলা হয়েছে। তবে যেহেতু আমরা জানি যে ২০২৪ সালের পরপরই হিন্দু জাতির ধ্বংস হবে তা যেমন তাদের হিন্দু ধর্মগ্রন্থে আছে, আর মুজাদ্দিদ আগমনেরও সঠিক সময় যিনি ইসলামকে সংস্করণ করবেন ও হিন্দু জাতি কর্তৃক যে নিপীড়ন অত্যাচার চলছে তা দমন করবেন সেই থেকে বলা যায় যে ২০২৪ সালের কাছাকাছি সময়েই এই হিন্দু জাতিরা বড় একটি ফিতনা সৃষ্টি করবে। আর সেটি হবে মুসলিমদের উপর গণহত্যা ও অত্যাচার-নিপীড়ন বাড়িয়ে ও বাংলাদেশকে দখলের মাধ্যমে। এর কারণে মুসলিমদের একটি দল তাদের এই গণহত্যা ও অত্যাচার-নিপীড়ন ঠেকাতে, হিন্দু জাতিদের বিরুদ্ধে এগিয়ে যাবে কিন্তু তারা হিন্দু জাতি কর্তৃক নিজেরাই গণহত্যার শিকার হবে। তারা হিন্দুদের আক্রমণ ঠেকাতে পারবে না এবং এই হিন্দু জাতি যেমন বর্তমান সময়ে মুসলিমদের উপর যে জুলুম ও অত্যাচার-নিপীড়ন, ধর্ষণ, খুন চালাচ্ছে তা আরো বাড়িয়ে দিবে। তারা চায় অখণ্ড ভারত প্রতিষ্ঠা করবে, রাম রাজত্ব প্রতিষ্ঠা করবে আর তা করবে মুসলিমদেরকে বিতারিত করে, মুসলিমদেরকে হত্যা করে, ধর্ষণ করে। তারা যেমন এখনো মানবতার ধার ধারে নি, তখনও তা দেখাবে না। তারা যেমন এই বর্তমান সময়ে মুসলিমদের নিঃশেষ করতে উঠে পরে লেগেছে তা আগামীতে আরো বেশি করবে যা এই হাদিস থেকে বুঝা যায়। আর এটি আসলেই হবে কারণ তারা যখন সর্বোচ্চ সীমালঙ্ঘন করে ফেলবে তখন তাদের পতন অনিবার্য হয়ে যাবে। হিন্দু জাতির মধ্যে যারা উগ্র ও যারা রাম রাজত্ব প্রতিষ্ঠা করতে চায় তারা মনে করে সকল মুসলিমদের হত্যা করলেই তা হয়ে যাবে। এভাবে যদি মুসলিমরা ভাবতো তাহলে আরো আগেই হিন্দু জাতির বিলুপ্তি হয়ে যেত। কারণ এই পৃথিবী মুসলিমরা সবচেয়ে বেশি শাসন করেছে। তারা অন্য ধর্মের কাউকে ক্ষতি করার কথা শুধু চিন্তা করলেও হিন্দু জাতি থাকতো না, কারণ হিন্দু জাতি শিরক করে ও মূর্তি পূজা করে। কিন্তু হিন্দু জাতি এখন যা করছে তার মুকাবিলা করা অনিবার্য হয়ে পড়েছে। তারা সাধারণ মুসলিম নারী-শিশুদেরও ছাড় দিচ্ছে না মুসলিম হওয়ার কারণে। তাই বলা হয়েছে যে হিন্দু জাতির এই বর্বরতা রুখতে পূর্ব অঞ্চলের মুসলিমদের একটি জামাত প্রথমে যেটি যাবে, সেই দলটিও হিন্দু জাতি দ্বারা গণহত্যা হয়ে যাবে আর পরাজিত হবে। কিন্তু পরে আরো একটি দল হিন্দু জাতির বর্বরতা রুখতে, অত্যাচার-নিপীড়ন ও মুসলিমদের উপর গণহত্যা ঠেকাতে তাদের বিরুদ্ধে মাঠে নামবে। তারা হিন্দু জাতির এই বর্বরতা বন্ধ করতে পারবে। কারণ সেই মুসলিম জামাতের বা দলের যিনি নেতা হবেন, তিনি হবেন আল্লাহ প্রদত্ত একজন নেতা, তিনি হবেন মুজাদ্দিদ বা দ্বীন সংস্কারক। আর এই দল বিজয়ী হবে ও হিন্দু জাতির পরাজয় ঘটাবে যারা মুসলিমদের উপর কঠোর অত্যাচার শুরু করেছিল। আর এর ফলে এই জাতিকে একদমই নিশ্চিহ্ন করে দেওয়া হবে। এই হিন্দুধর্মের বিলুপ্তি হবে। আর এখন এই হাদিসের ব্যাখ্যা জেনেও, হিন্দু জাতির বর্তমান কর্মকান্ড জেনেও যদি হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা যদি বলে কেন তাদের বিলুপ্তি হবে, তাহলে তারা অন্ধ হয়ে আছে। তাদের মন্দিরের পতাকা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া তাদের জন্য সেই অশনি সংকেত। এই ভবিষ্যৎবাণী ও অশনি সংকেত হিসেবে হিন্দু জাতির উচিত ছিল যে তারা মুসলিমদের উপর অত্যাচার-নির্যাতন করা ছেড়ে দিবে, কাশ্মীরকে আজাদ করে দিবে কিন্তু তারা হয়তো তা করবে না কখনই। কারণ তারা রাম রাজত্ব ও অখণ্ড ভারত তৈরি করতে অনড়। এটাই হবে তাদের পতনের মূল কারণ, এটাই হবে তাদের বিলুপ্তির মূল কারণ। কিন্তু হিন্দু ভাই-বোনদের মধ্যে যারা এই সত্যকে বিশ্বাস করে তাদের উচিৎ সেভাবে প্রস্তুত হওয়া ও মুসলিমদের উপর যে গণহত্যা ও অত্যাচার-নিপীড়ন চলছে তার বিরোধিতা করা।
৭। হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ উপদেশ।
অনেক হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা বলবেন যে, হিন্দুধর্মে যে এই অশনি সংকেত এর কারণে আগামী ৫ বছরের মাথায় পরাজয় ঘটবে তা কোন হিন্দুধর্ম গ্রন্থে বলা আছে জিজ্ঞেস করবেন। কিন্তু সেটি দেখালেও কি মানবেন? না মানবেন না। ভারতের আলোচিত এক হিন্দু শাস্ত্রবিদ শ্রী শ্রী শ্যামা ক্ষ্যাপা এ বিষয়ে আলোচনা করেছেন ইউটিউবে যে- এই বিষয়ে কোন হিন্দুধর্ম গ্রন্থে উল্লেখ রয়েছে। আর এটাই সত্য যে হিন্দুদের পতনের আরেকটি মূল কারণ তারা তাদের ধর্মকে মানে না। তারা যা করে তা তাদের ধর্ম বিরোধী কাজ ছাড়া কিছুই নয়। তাদের ধর্মগ্রন্থ বেদ, পুরাণ, উপনিষদ্ ইত্যাদি আরো অনেক গ্রন্থ রয়েছে। কিন্তু তাতে কি লেখা তা কি একবার পড়ে দেখেছে? আপনাদের চোখ খোলার জন্য আলোচনা করবো যে আপনাদের ধর্ম গ্রন্থে কি রয়েছে আর আপনারা কি মানেন। বেদ থেকে কিছু শ্লোক বা মন্ত্র বাংলায় উল্লেখ করছি-
“আদিতে তিনি-ই ছিলেন। সৃষ্টির সবকিছুর উৎসও তিনি-ই। সমগ্র অস্তিত্বের তিনি-ই প্রভূ আকাশ ও ভূ-মন্ডলে বিরাজমান সবকিছূর তিনি-ই লালনকারী। অন্য কারো কাছে নয়, শুধুমাত্র সেই মহাপ্রভূর কাছেই আমাদের সবকিছূ সমর্পন করছি”। [অথর্ব বেদ- ৪.২.৭]
হিন্দুধর্মের কিতাব বেদ এর আলোকে বহু ইশ্বর নয় একজন মহাপরাক্রমশালী প্রভুর ইবাদাত করতে হবে। কিন্তু হিন্দুরা করছে কি? হাজারো, লাখো দেবতার পূজা। তাদের পুরোহিত বা পণ্ডিত শ্রেণীর লোকেরা যারা কিছু বিশেষ স্বার্থ হাসিল করতে চায় তারাই এরকম বিভিন্ন নিয়ম-কানুন, প্রথা চালু করেছে যা সনাতনী ধর্মীয় গ্রন্থগুলোর একদম বিপরীত। মূলত তাদের উদ্দেশ্য অন্য কিছু হাসিল করা অর্থাৎ দুনিয়া হাসিল করা পরকাল নয়। তাহলে তারা তাদের ধর্ম বিরোধী কাজই কি করছে না? তারা তাহলে কাদের পূজা করছে? তাদের কোন ধর্ম গ্রন্থে কি পূজা করার কথা বলা হয়েছে? উত্তরঃ না। আরো কিছু শ্লোক-
“সত্যজ্ঞানী তিনিই, যিনি জানেন প্রভূ এক এবং অদ্বিতীয়। তিনি সর্বশক্তিমান এবং সর্ব বিষয়ে একক ক্ষমতার অধিকারী। প্রাণ এবং নিষ্প্রাণের সব-কিছুই তার নখদর্পণে। সকল ক্ষমতার কেন্দ্র তিনি একক অনন্য”। [অথর্ব বেদঃ ১৩.৫.১৪-২১]
“সদা-সর্বত্র বিরাজমান তন্দ্রা-নিদ্রাহীন সদা সজাগ প্রতিনিয়ত করূণা বর্ষণকারী সর্বশক্তিমান হে প্রভূ! আমরা শূধু তোমারই মহিমা স্বরণ করি, তোমারই জয়গান গাই। প্রভূ হে! আমাদের সর্বোত্তম আত্নিক পথে, আলোকিত পথে পরিচালনা করো। আমরা যেন সব-সময় সত্য-মিথ্যার পার্থক্যকে অনূধাবন করতে পারি”। [ঋগবেদঃ ৩.৬২.১০]
স্বামী সত্যপ্রকাশ সরস্বতী বলেছে-
“বেদের আস্তিকতা সহজ সরল নির্ভেজাল একেশ্বরবাদে বিশ্বাস। প্রভূ একক, অদ্বিতীয় এবং সর্ব শক্তিমান। দৃশ্যমান সকল শক্তির পেছনে রয়েছে তারই মহাশক্তি। সকল আলোর নেপথ্যে রয়েছে তার-ই মহাজ্যোতি। অঙ্গের নড়াচড়ায় মানবদেহে আত্নার উপস্হিতি যেমন স্বীকৃত হয়, তেমনি স্রষ্টার সৃষ্টির সুপরিকল্পিত গতিশীলতার দিকে তাকালেই মহাশক্তিমান প্রভূকে আমরা উপলব্ধি করতে পারি”।
তো উপরের যে শ্লোকগুলো আছে তা কতজন হিন্দুরা মেনে চলে তা জানা নেই। আপনাদের হিন্দু ধর্মগ্রন্থে যে ভবিষ্যৎবাণী করা রয়েছে তা যে মানবেন না তার কারণ হচ্ছে যে মহানবী ﷺ সম্পর্কে যে ভবিষ্যৎবাণী করা রয়েছে সেটাই আপনারা এখনো মানতে পারেন নি। আপনাদের নিজেদের বানানো মতবাদেই বিশ্বাসী হয়ে আছেন। আর আপনারা যতই বলেন যে আমরা নিজেদের ধর্মকে মানি কিন্তু আপনারা হিন্দুধর্মকে মানেন না।
হিন্দু ধর্মগ্রন্থে নবী মুহাম্মাদ ﷺ -এর জন্মস্থান, তার পিতা মাতার নামসহ ভবিষ্যৎবানী করা হয়েছিলো। বলা হয়েছেঃ-
সাম্ভলে বিষ্ণুইয়াসু গৃহে, প্রাদুর্ভ্রাম্মু হংসুমামুতাং সুমতাং মাতৃভিবো।
[কল্কিপুরাণ; অধ্যায়ঃ-২, শ্লোকঃ- ১১]
অর্থঃ মক্কা শহরের আব্দুল্লাহ এর ঘরে আমিনার গর্ভে তিনি জন্ম নিবেন।
শব্দার্থঃ
সংস্কৃত- সাম্ভল = বাংলায়-শান্তির স্থান। আরবিতে হয়, বালাদুল আমিন যা মক্কা শহরের আরেক নাম।
বিষ্ণুইয়াসু-গৃহে এর মানে-
বিষ্ণু = প্রতিপালক
ইয়াস= গোলাম/বান্দা
সুতরাং বিষ্ণুইয়াস= প্রতিপালকের বান্দা, যা আরবিতে "আব্দুল্লাহ"= আল্লাহর বান্দা!
সুতরাং, বিষ্ণুইয়াসু গৃহে = আব্দুল্লাহর ঘরে।
সুমতাং মাতৃভিবো= শান্তির মাতৃগর্ভে।
এখানে, সুমতাং= শান্তি, যা আরবিতে হয়, "আমিনা"!
আর মাতৃভিবো= মাতৃগর্ভে।
বাকি অংশের অর্থ হয়- আমিনা নামের মায়ের গর্ভে তার জন্ম হবে।
সুতরাং পুরো অর্থ এমন দাড়ায়, মক্কা শহরের আব্দুল্লাহ এর ঘরে মা আমিনার গর্ভে তার জন্ম হবে। সনাতন ধর্মে উল্লেখিত মহামানব আমাদের প্রিয় নবী মুহাম্মাদ ﷺ যার আনুগত্য স্বীকার করা সবার জন্য আবশ্যক। এটি তাদের ধর্মগ্রন্থে উল্লেখ থাকার পরও কি মানতে পেরেছে? না পারে নি। তারা তাদের ধর্মগ্রন্থের বাহিরে নিজেদের মত, নিজেদের পন্থা বানিয়ে এক নতুন ধর্ম সৃষ্টি করেছে। আর যাই হোক সেটা হিন্দু ধর্ম না। কারণ হিন্দু ধর্মে মূর্তি পূজা করার কথা নেই তাও তারা সেটি করে, এক ঈশ্বরের কথা বলা হয়েছে তারা বানিয়ে নিয়েছে লাখো ঈশ্বর, গোমাংস খাওয়া হিন্দু ধর্মে জায়েজ কিন্তু তারা তা নিষিদ্ধ করে নিয়েছে আর অন্য ধর্মের মানুষরা খেলে তাদেরকে সুযোগ পেলে অত্যাচার ও নিপীড়ন করছে। কিছুদিন আগেও গোমাংস খাওয়া যাবে কিনা হিন্দু ধর্মগ্রন্থ দিয়ে ব্রাদার রাহুল হুসাইন ডিবেটে দেখালেন আর তাতে সবাই প্রমাণ পেয়েছে যে হিন্দু ধর্মেই বলা আছে গো মাংস খাওয়া যাবে। এরপরও তারা তাদের ধর্মগ্রন্থের উপর বিশ্বাস করতে পারছে না। হিন্দু নেতারা, বিজেপি নেতারা, ইসকোন যা বলছে, যারা হিন্দু ধর্মগ্রন্থ পড়ে নি বা পড়লেও এসব গোপন করছে, ভুল ব্যাখ্যা করছে, তারাই এখন হিন্দুদের চালাচ্ছে, হিন্দু ধর্মের পণ্ডিত সেজে বসে আছে আর বলছে কি করবে না করবে। আর তাই তাদের ধ্বংস হওয়া, বিলুপ্তি হওয়া সাধারণ একটি ব্যাপারই। যারা নিজেদের ধর্মগ্রন্থকেই মানে না, তারা হিন্দু বা সনাতনি ধর্মাবলম্বী বলে নিজেদের পরিচয় কিভাবে দেয় তারাই জানে। তাই হিন্দু তথা সনাতনীদের বলবো যে, আপনারা যে ভুল পথে আছেন তা থেকে ফিরে আসার জন্য আগে নিজেদের ধর্মীয়গ্রন্থগুলো পড়ুন, রিসার্চ করুন। আর মন্দির ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার মাধ্যমে যে অশনি সংকেত আসছে আর সেই সংকেত কি বহন করে সে ব্যাপারে আপনারা জানার পর কি পদক্ষেপ নিবেন তা আপনাদের উপরই ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। মুসলিম জাতির জন্যও এটি একটি সতর্কবার্তা যে আপনারা যারা ঠিক মত ধর্মকে মানছেন না আর যাকে তাকে নেতা বানিয়ে অনুসরণ করছেন যার কথা আল্লাহর রসূল ﷺ বলে যাননি, যারা অযোগ্য হওয়ার পরও তাদের নেতা বানিয়ে নিয়েছে, অহংকারে সত্য ও সঠিককে অবজ্ঞা করে, আল্লাহ প্রদত্ত নেতাকে না মেনে নিজেদের মত চলবে তাদের পতনও এই হাদিসের মধ্যে বলা আছে যেটি এই আলোচনাতে তুলে ধরলাম। পুরো আলোচনাটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত আরো একবার পড়ুন আর পরিস্থিতি আন্দাজ করুন আর সেই অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নিন।
0 মন্তব্যসমূহ