হযরত জাফর সাদিক (রহঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, "সুফিয়ানী এবং (মানসূর) ইয়ামানীর উত্থান হবে প্রতিযোগিতার দুটি ঘোড়ার মত"।
- (কিতাবুল গাইবাহ, ১৮ নং অধ্যায়, পৃষ্ঠা নং ৪৪৫; মুজ'য়াম আল হাদীস ইমাম আল মাহদী, খণ্ড ৩, পৃষ্ঠা ৪৭৮; বিহারুল আনোয়ার, খণ্ড ৫২, পৃষ্ঠা ২৭৫, ২৫৩)
সুফিয়ানীর যখন সিরিয়া থেকে আত্মপ্রকাশ হবে ঠিক অন্যদিকে ইমাম মানসূরের আত্মপ্রকাশ হবে ইয়েমেনে। ইমাম মানসূর মাহদীর খিলাফত প্রতিষ্ঠায় সাহায্যকারী অন্যতম নেতা। তারও একজন সহচর থাকবে যার নাম হবে হারিস ইবনু হাররাস। তার নিজস্ব বাহিনী থাকবে এবং ইসলামের বিজয়ের জন্য কাজ করে যাবে এবং মাহদীর জন্য খিলাফত তৈরি করতে থাকবে। তিনি বনু হাশেম থেকে হবেন এবং সাথে কাহতানী বংশেরও হবেন। তার নাম বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্নভাবে উল্লেখ পাওয়া যায়। অনেক জায়গায় সরাসরি মানসূর নাম, এছাড়া কাহতানী খলীফা, ইয়েমেনী, বনু হাশেমী ইত্যাদি উপনামে চিহ্নিত হয়। ইমাম মানসূর যখন বিভিন্ন এলাকা জয় করতে থাকবেন তখন শুয়াইব ইবনে সালেহও তার সঙ্গে যোগ দিবেন। শুয়াইব ইবনে সালেহ ইমাম মাহদীর সহচর। তার নিজেরই একটি বাহিনী থাকবে যাতে ৪ থেকে ৫ হাজার সৈন্য থাকবে। সুফিয়ানীর সাথে তাদের যুদ্ধ হবে কিন্তু তাতে মানসূর ও শুয়াইব ইবনে সালেহ এর দল পরাজিত হবে এবং তারপর ইমাম মানসূর মাহদীর সাহায্যার্থে মদিনায় গমন করবেন এবং শুয়াইব ইবনে সালেহ বাইতুল মুকাদ্দাস বিজয়ের জন্য রওনা দিবেন। এরপর পূর্ব দিকের খুরাসানী কালো পতাকাবাহী বের হয়ে আসবে এবং ইরাকে সুফিয়ানীর দলকে পরাজিত করবেন এবং তখন তারাও দুটি দলে ভাগ হয়ে এক দল আরবে (মাহদীর খোজে) এবং একদল বাইতুল মুকাদ্দাসের (বিজয়ের জন্য) দিকে রওনা করবে। এটি হচ্ছে সকল হাদিসের মূল কথা। হাদিসগুলো থেকে আরো বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যাবে, সেগুলো উল্লেখ করা হলো।
৬.২৫.১ ইমাম মানসূর ও তার সহচর হারিস ইবনু হাররাস
ইমাম মানসূর মাহদীর আগে আত্মপ্রকাশ করবেন এবং তার জন্য খিলাফত তৈরি করবেন, কিন্তু মাহদীর মৃত্যুর পর পরবর্তীতে তিনি খলীফাও হবেন। তার সহচর থাকবে হারিস ইবনু হাররাস।
হারূন (রহঃ) বলেন, আমর ইবনু আবূ কায়িস পর্যায়ক্রমে মুতাররিফ ইবনু তারিফ, হাসান ও হিলাল ইবনু আমর থেকে বর্ণনা করে বলেন, আমি আলী রাঃ-কে বলতে শুনেছি, নবী ﷺ বলেছেনঃ নদীর পিছন দিক থেকে জনৈক ব্যক্তি আবির্ভূত হবে। তাকে হারিস ইবনু হাররাস বলে ডাকা হবে। তার আগে জনৈক ব্যক্তি আসবেন, যার নাম হবে মানসুর। তিনি মুহাম্মাদ ﷺ-এর পরিজনকে (ইমাম মাহদীকে) আশ্রয় দিবেন, যেরূপ কুরাইশরা রসূলুল্লাহ ﷺ-কে স্থান দিয়েছিল। সুতরাং প্রত্যেক মু’মিনের কর্তব্য হবে তার সাহায্যে এগিয়ে আসা, তার ডাকে সাড়া দেয়া।
- (যঈফ, সুনান আবূ দাউদ (তাহকিককৃত/ আলবানী একাঃ) ৪২৯০ [ইঃ ফাঃ ৪২৪০])
’আলী (রা:) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন: (শেষ যামানায়) নহরের ঐ প্রান্ত (তথা বুখারা ও সমরকন্দ প্রভৃতি স্থান) থেকে এক ব্যক্তির আগমন ঘটবে, যিনি ’হারিসে হাররাস’ নামে পরিচিত হবেন। তার সম্মুখভাগে ’মানসূর’ নামে এক ব্যক্তি থাকবেন (মানসূর তার নেতা হবেন)। তিনি মুহাম্মাদ ﷺ -এর পরিবার-পরিজনকে (ইমাম মাহদীকে) এমনভাবে আশ্রয় দান করবেন যেমনভাবে কুরায়শগণ আশ্রয় দিয়েছিল রসূলুল্লাহ ﷺ -কে। তখন সমস্ত ঈমানদারের ওপর তাকে (মানসূরকে) সাহায্য করা কিংবা তিনি ﷺ বলেছেন, তার ডাকে সাড়া দেয়া ওয়াজিব হয়ে যাবে। *
- (যঈফ, মিশকাত হাঃ একাঃ ৫৪৫৮; য'ঈফুল জামি ৬৪১৮; যঈফ কারণ আবু ইসহাক মাজহুল)
- * ইমাম মানসূর ও হারিস ইবনু হাররাস এর ব্যাপারে অন্যান্য কিতাবে অনেক সহীহ ও যঈফ হাদিস এসেছে। তিনি মাহদীর খিলাফত প্রতিষ্ঠায় অন্যতম সাহায্যকারী এবং এ কারণে তাকে সাহায্য করা এবং তার আহবানে সারা দেওয়াই হবে উচিৎ কাজ। যঈফ হওয়া সত্যেও এর বর্ণনা সহীহ এর সাথে মিলে যাওয়ায় এটি গ্রহণযোগ্য।
হযরত আবু জা’ফর (রা:) হতে বর্ণিত যে, তিনি বলেন বনু হাশেম হতে এক যুবক (মানসূর) বের হবে। যার ডান হাতের তালুতে খোরাসানের কালো ঝান্ডবাহী দলের বন্ধুত্ব থাকবে। যে দলের ভিতর শুয়াইব ইবনে সালেহ থাকবে। সে সুফিয়ানীর সাথীদের সাথে যুদ্ধ করবে এবং তাদের পরাজিত করবে। *
- (যঈফ, আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ ৯০১)
- * হাদিসে বলা আছে মানসূর ও শুয়াইব এর দল সুফিয়ানীকে পরাজিত করবে। কিন্তু এই বিষয়টি ভুল। কারণ সুফিয়ানীর কাছে উল্টো পরাজিত হবে মানসূর ও শুয়াইব এর দল। এর অনুবাদে ভুল হয়েছে বলে মনে হয় না, তবে হাদিসের বর্ণনাতেই ভুল হতে পারে। আর এর মান যঈফও।
৬.২৫.২ শুয়াইব ইবনে সালেহ
হযরত মুহাম্মাদ ইবনে হানাফিয়া হতে বর্ণিত যে, তিনি বলেন বনু আব্বাসের একটি কালো ঝান্ডা বের হবে (৭৫০-১২৫৮ সাল পর্যন্ত তারা ক্ষমতায় ছিল)। অতঃপর খোরাসান থেকে আরেকটি কালো ঝান্ডা বের হবে। তাদের টুপি হবে কালো। তাদের পোষাক হবে সাদা রং এর। তাদের সম্মুখে একজন লোক থাকবে যাকে শুয়াইব ইবনে সালেহ অথবা সালেহ ইবনে শুয়াইব ডাকা হবে। সে হবে তামিম গোত্রের। তারা সুফিয়ানীর সৈন্যদের পরাজিত করবে। এমনকি তারা বাইতুল মুকাদ্দাসে অবস্থান নিবে। তারা মাহদীর রাজত্বের জন্য পথ সহজ ও প্রস্তুত করবে। আর সিরিয়া হতে তিনশত লোক তার সাথে মিলিত হবে। তার বের হওয়া ও মাহদীর নিকট বিষয় সমর্পণ করার মধ্যে বাহাত্তর মাসের ব্যবধান হবে।
- (যঈফ, আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ ৮৯৪)
হযরত সুফিয়ান কালবী (রা:) হতে বর্ণিত যে, তিনি বলেন মাহদীর পতাকা তলে এক যুবক বের হবে। অল্প বয়সের। পাতলা দাড়ি বিশিষ্ট। হলুদ বর্ণের। আর হযরত ওয়ালীদ তার হাদীসের মধ্যে আসফার (হলুদ বর্ণের হওয়া) উল্লেখ করেন নাই। যদি সে পাহাড়ের সম্মুখিন হয়ে তাহলে পাহাড়কেও কাঁপিয়ে দিবে। আর হযরত ওয়ালিদ বলেন তা ভেঙ্গে ফেলবে। এমনকি সে ঈলাতে (বাইতুল মুকাদ্দাসে) অবতরণ করবে।
- (আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ ১০৭১ [পথিক প্রকা: ১০৬৮; তাহকীক: যঈফ])
হযরত ইবনুল হানাফিয়্যাহ (রহ:) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, খোরাসান থেকে কালো পতাকাবাহী দল এবং শুয়াইব ইবনে সালেহ ও মাহদীর আত্নপ্রকাশ আর মাহদীর হাতে ক্ষমতা আসা বাহাত্তর মাসের (৬ বছরের) মধ্যেই সংঘটিত হবে।
- (যঈফ জিদ্দান, আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ ৮০৪)
হযরত হাসান (রা:) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, আর্যদের পিতল বর্নের চাঁর ব্যাক্তি বনি তামিম গোত্রের অভিমুখে বের হবেন। তাদের মধ্যে একজন হবেন হাঙর মাছের মত (তামাটে বর্ণের মত), যার নাম হবে শুয়াইব ইবনে সালেহ। তার সাথে ৪০০০ সৈন্য থাকবে। তাদের পোশাক হবে সাদা, আর তাদের পতাকা হবে কালো। তারা ইমাম মাহদীর অগ্রগামী অনুগত সৈন্য হবে এমনকি তারা তাদের শত্রুদের পরাজিত না করে মাহদীর সাথে সাথে সাক্ষাৎ করবে না।
- (যঈফ, আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ ৮৯৭)
হযরত যামরা ইবনে হাবীব (রহঃ) ও তার শাইখদের থেকে বর্ণিত তারা বলেন, সুফিয়ানী তার অশ্বারোহী বাহিনী ও সৈন্যদল প্রেরণ করবে। তারা খোরাসানের আম্মাতুশ শিরকে (ইরানের ইসফাহান শহর) ও পারস্য (ইরানের) ভুমিতে পৌঁছাবে। অতঃপর পূর্বাঞ্চলের (ইরানের) অধিবাসীরা তাদের সাথে বিদ্রোহ করবে। ফলে তারা তাদের সাথে যুদ্ধ করবে। আর তাদের সাথে বিভিন্ন জায়গায় অনেক যুদ্ধ হবে। যখন তাদের মাঝে যুদ্ধ বিগ্রহ দীর্ঘস্থায়ী হবে তখন বনু হাশেমের এক ব্যক্তির নিকট বাইয়াত গ্রহণ করবে। আর সে সেদিন পূর্বাঞ্চলের একেবারে শেষে থাকবে। অতঃপর সে খোরাসানবাসীদের নিয়ে বের হবে। উক্ত দলের সম্মুখে থাকবে বনু তামিমের আযাদকৃত গোলাম (শুয়াইব ইবনে সালেহ)। সে হবে হলুদ বর্ণের, পাতলা দাড়ি ওয়ালা। পাঁচ হাজারের (সৈন্য নিয়ে) মধ্যে তার দিকে বের হবে।
- (যঈফ, আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ ৯১৫)
হযরত আম্মার ইবনে ইয়াসীর (রা:) হতে বর্ণিত যে, তিনি বলেন মাহদীর পতাকায় বা দলে শুয়াইব ইবনে সালেহ থাকবে।
- (যঈফ, আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ ৮৯৯)
হযরত সুফিয়ান কালবী (রা:) হতে বর্ণিত যে, তিনি বলেন মাহদীর দলে এক কম বয়সী, পাতলা দাঁড়ি বিশিষ্ট, এবং হলুদ বর্ণের এক তরুণ যুবক বের হবে। আর ’ওয়ালীদ হলুদ বর্ণ’ উল্যেখ করেন নাই। যদি পাহাড়ের সাথে যুদ্ধ করে তাহলে পাহাড়কে কাঁপিয়ে দিবে। আর ওয়ালীদ বলেন ‘ভেঙ্গে ফেলবে’। এক পর্যায়ে সে ইলিয়ায় (বাইতুল মুকাদ্দাস) উপস্থিত হবে।
- (যঈফ, আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ ৯০২)
হযরত কা’ব (রা:) হতে বর্ণিত যে, তিনি বলেন যখন এক ব্যক্তি সিরিয়া ও মিসরের শেষাংসের রাজা হবে, তখন সিরিয়াবাসী ও মিসরবাসীদের মাঝে যুদ্ধ হবে। আর সিরিয়াবাসী মিসরের অগ্রভাগ দখল করে নিবে। আর ছোট কালো ঝান্ডা (দল) সহকারে এক ব্যক্তি পূর্বাঞ্চল থেকে সিরিয়াবাসীদের দিকে আসবে। আর সে হল ঐ ব্যক্তি যে মাহদীর দিকে অনুসরণতা বা আনুগত্যতা আদায় করবে। আনুগত্যতা স্বীকার করবে। হযরত আবু কুবাইল বলেন আফ্রিকায় এক ব্যক্তি বার বছর রাজত্ব করবে। অতঃপর তার পর যুদ্ধ হবে। যুদ্ধের পর তামাটে রং এর এক ব্যক্তি বাদশা হবে। সে উহাকে ন্যয়পরায়ণতা দ্বারা ভরে দিবে। অতঃপর সে মাহদীর দিকে সফর করবে। এবং তার আনুগত্য স্বীকার করবে। এবং তার পক্ষ হয়ে যুদ্ধ করবে।
- (যঈফ, আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ ৯০৩)
৬.২৫.৩ মানসুরের উপর সুফিয়ানীর বিজয়
হযরত আবু জাফর (রহ:) কর্তৃক বর্ণিত তিনি বলেন, সুফিয়ানী যখন আবকা’ ও মানসূর ইয়ামানীর উপর জয়লাভ করবে। অন্যদিকে তুর্কি ও রোমান বাহিনী এগিয়ে আসবে তখন তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধেও সুফিয়ানী জয়ী হবে।
- (যঈফ, আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ ৬২১)
হযরত আলী রা: হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, কালো ঝান্ডা বের হবে। যা সুফিয়ানীর সাথে যুদ্ধ করবে। তাদের মধ্যে বনু হাশেমের একজন যুবক (মানসূর) থাকবে। তার বাম কাঁধে থাকবে বন্ধুত্ব বা কার্য সম্পাদনের শক্তি। আর তার সম্মুখভাগে বনু তামিমের এক ব্যক্তি থাকবে। যাকে শুয়াইব ইবনে সালেহ বলে ডাকা হবে। তার সঙ্গীরা সুফিয়ানীর কাছে পরাজিত হবে।
- (যঈফ, আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ ৯০৭)
হযরত যামরা ইবনে হাবীব ও তার শাইখদের থেকে বর্ণিত যে, তারা বলেন সুফিয়ানী তার অশ্বারোহী বাহিনী ও সৈন্যদল প্রেরণ করবে। তারা খোরাসানের আম্মাতুশ শিরকে ও পারস্য ভুমিতে পৌছবে। অতঃপর পূর্বাঞ্চলের অধিবাসীরা তাদের সাথে বিদ্রোহ করবে। ফলে তারা তাদের সাথে যুদ্ধ করবে। আর তাদের সাথে বিভিন্ন জায়গায় অনেক যুদ্ধ হবে। যখন তাদের মাঝে যুদ্ধ বিগ্রহ দীর্ঘস্থায়ী হবে তখন বনু হাশেমের এক ব্যক্তির নিকট বাইয়াত গ্রহণ করবে। আর সে সেদিন পূর্বাঞ্চলের একেবারে শেষে থাকবে। অতঃপর সে খোরাসানবাসীদের নিয়ে বের হবে। উক্ত দলের সম্মুখে থাকবে বনু তামিমের আযাদকৃত গোলাম। সে হবে হলুদ বর্ণের, পাতলা দাঁড়ি ওয়ালা। পাচ হাজারের (সৈন্য নিয়ে) মধ্যে তার দিকে বের হবে। যখন তার নিকট তার বের হওয়ার খবর পৌছবে তখন সে তার নিকট বাইয়াত গ্রহণ করবে এবং তাকে সম্মুখে দিবে। সেদিন যদি তাদের সামনে রাওয়াসীর পাহাড়ও আসে তাহলে তার মিটিয়ে দিবে। অতঃপর তার সাথে সুফিয়ানীর সৈন্যদের সাথে দেখা হবে। অতঃপর সে তাদের পরজিত করবে। আর তাদের থেকে বিশাল এক অংশকে সেদিন হত্যা করবে। এমনিভাবে তাদেরকে এক এলাকা হতে আরেক এলাকায় পরাজিত করতে থাকবে। এমনকি তাদের ইরাকের দিকে পরাজিত করে দিবে। অতঃপর তাদের মাঝে ও সুফিয়ানীর অশ্বারোহীদের মাঝে যুদ্ধ হবে। আর সে যুদ্ধে সুফিয়ানীর বিজয় হবে। আর হাশেমী পালায়ন করবে। আর শুয়াইব ইবনে সালেহ গোপনে বাইতুল মুকাদ্দাসের দিকে বের হয়ে যাবে। সে মাহদীর আবাস স্থল গোছাতে থাকবে, যখন তার নিকট সিরিয়ায় মাহদীর অভির্বাবের খবর আসবে। *
- (যঈফ, আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ ৯১৫)
- * এই হাদিস থেকে বুঝা যায়, খোরাসানের মূল বাহিনী বের হওয়ার পূর্বেই খোরাসান থেকে কিছু যোদ্ধারা ইরানের ভূখণ্ডে তাদের সাথে দীর্ঘদিন ধরে যুদ্ধে লিপ্ত থাকবে, তারপর শুয়াইব ইবনে সালেহ এর নেতৃত্বে ৪/৫ হাজার সৈন্য নিয়ে ইরানের ফার্স শহরের ইস্তাখর নামক ঐতিহাসিক স্থানে সুফিয়ানী বাহিনীর সাথে ভয়ংকর যুদ্ধে লিপ্ত হবে। আর এই যুদ্ধেকেই আহওয়াজের যুদ্ধ বলা হয়েছে। তবে শুয়াইব ইবনে সালেহ যখন ৪/৫ হাজার সৈন্য নিয়ে ইরানের দিকে রওনা দিবে তার সাথে আরো কয়েকটি ছোট ছোট দলও থাকবে।
হযরত ওলীদ সহ কতিপয় বর্ণনাকারী বলেন, সে (মানসূর) মৃত্যুবরণ করবে না। তবে পরাজয়ের পরে সে মক্কার উদ্দেশ্যে বের হবে। অতঃপর যখন মাহদীর অবির্ভাব হবে তখন তার সাথে বের হবে।
- (যঈফ, আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ ৯১৭)
একটি প্রশ্নঃ মানসূর পালিয়ে মদীনা বা মক্কার দিকে চলে যাবে আর শুয়াইব তার সৈন্যদের নিয়ে জেরুজালেমে আশ্রয় নিবে। এখানে একটি প্রশ্ন থেকেই যায়, মাহদীর বন্ধু শুয়াইব ইবনে ছালেহ সুফিয়ানীর কাছে পরাজিত হয়ে জেরুজালেমের দিকে কেনো যাবে? জেরুজালেমে তো দুশমন ইহুদীরা। তাহলে?
উত্তরঃ ঠিক একই সময়ে অন্যদিকে জেরুজালেম ইহুদিদের কাছ থেকে মুসলমানদের দখলে আনার জন্য ইমাম মাহমুদ তার সৈন্যদের জেরুজালেমে পাঠাবেন। আর তাদের নেতা বা সেনাপতি থাকবে সাহেবে কিরান। যার নাম শামীম বারাহ। ইমাম মাহমুদ এই জিহাদে উপস্থিত থাকবেন না। কেননা তিনি শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধকতায় ভুগবেন, যা হাদিসে এসেছে।
শামীম বারাহ যখন জেরুজালেমে বিজয়ের পথে ঠিক একই সময়ে সুফিয়ানীর কাছে পরাজিত হয়ে শুয়াইব ইবনে ছালেহ জেরুজালেমের দিকে (কৌশল হিসেবে) পালিয়ে যাবে। আর সেখানে গিয়ে শামীম বারাহকে যুদ্ধে সহযোগিতা করবেন।
অতঃপর, ঐ জিহাদে ইহুদিদের পরাজয় হবে ও জেরুজালেম বিজয় হবে। আর ঐ জিহাদের সময় ইহুদীরা যখন গাছ বা পাথরের আড়ালে লুকাবে, তখন গাছ ও পাথর কথা বলবে।
জেরুজালেম বিজয় করে, সেখানে সবকিছু ঠিকঠাক করবে শামীম বারাহ ও শুয়াইব ইবনে ছালেহ। অন্যদিকে মাহমুদ তখন হিন্দ বা খুরাসানের দিকে থাকবেন। পরে কালো পতাকা নিয়ে বের হবেন আরবের উদ্দেশ্যে।
(উল্লেখ্য যে, খোরাসান তখন ইমাম মাহমুদ এর দখলকৃত এলাকা হবে। কেননা, ভারতীয় উপমহাদেশ বলতে, ভারত সহ, বাংলাদেশ, মিয়ানমার, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, নেপাল, ভুটান সহ আফগানিস্তানকেও বোঝায় এবং ইরান পর্যন্ত এলাকা দখলে থাকবে।)
হাদিসে এসেছে-
হযরত জাহশ (রা:) বলেন, আমি রসূল ﷺ কে বলতে শুনেছি অবশ্যই কিয়ামতের পূর্বে ইহুদী-খ্রিষ্টানরা পৃথিবীতে বিপর্যয় সৃষ্টি করবে। তখন "শুয়াইব" আর "শামীম বারাহ" তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে। আর সেই যুদ্ধে গাছ আর পাথর তাদের সাহায্যের উছিলা হবে। আর এটা মুমিনদের জন্য আল্লাহর নিদর্শন।
- (আখীরুজ্জামানা আল মাহদী ফিল আলামাতিল কিয়ামাহ ১৫৮)
হযরত আলী (রা:) বলেন, রসূল ﷺ বলেছেন, ইহুদী-খ্রিষ্টানদের সাথে মুসলমানদের দুইটি বড় যুদ্ধ হবে। আর দুটিতেই মুসলমানদের সাহায্যের জন্য আল্লহ তাআলা গাছ ও পাথরের জবান খুলে দেবেন। তার একটি হবে মরিয়ম পুত্র ঈসা (আ.) এর সময়। আর প্রথমটি মাহদীর আগমনের কিছু পূর্বে। *
- (আখীরুজ্জামানা আল মাহদী ফিল আলামাতিল কিয়ামাহ ১৪৭)
- * মাহদির আগমনের পুর্বে জেরুজালেম দখল হবে সেটাই বলা আছে।
হযরত কাতাদাহ (রা:) বলেন, রসূল ﷺ বলেছেন - মাহদীর আগমনের পূর্বে অভিশপ্ত জাতির সাথে শামীম বারাহর নেতৃত্বে মুমিনদের যুদ্ধ হবে। সেই যুদ্ধে জেরুজালেম মুমিনদের দখলে আসবে।
- (আখীরুজ্জামানা আল মাহদী ফিল আলামাতিল কিয়ামাহ ৯৭)
0 মন্তব্যসমূহ