ইমাম মানসূরকে অস্ত্র দ্বারা বিশ্বাসঘাতকতা বা বিদ্রোহের মাধ্যমে শহীদ করা হবে। এরপর সবাই খলীফা নির্বাচন নিয়ে মতবিরোধে লিপ্ত হবে। তারা কুরাইশকে ক্ষমতা দিতে চাইবে না কিন্তু এমন একজনকে তাদের প্রধান/আমীর বানাবে যে নিজেই হবে হাশেমী আর কিছু জায়গায় এসেছে সেও রসূল ﷺ বংশধর। তিনিও সৎ চরিত্রের অধিকারী হবেন, মুসলিম উম্মতের সর্বশেষ আমীর হবেন আর তার পিছনেই ঈসা (আঃ) নামাজ পড়বেন এবং তার পরেই তিনি ঈসা (আঃ) এর কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করবেন এবং ঈসা (আঃ) মুসলিমদের আমীর বা শাসক হবেন।
আবূ হুরায়রাহ্ (রা:) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন: জাহজাহ নামক এক লোক মানুষের শাসক না হওয়া পর্যন্ত রাত্র-দিনের আবর্তন (কিয়ামত) শেষ হবে না। অপর এক বর্ণনায় আছে, যে যাবত গোলাম বংশ হতে 'জাহজাহ' নামক এক ব্যক্তি শাসক না হবে।
- (সহীহ, সহীহ মুসলিম ৬১-(২৯১১); মিশকাত হাঃ একাঃ ৫৪১৬-[৭]; সহীহুল জামি ৭২৭৪)
মুহাম্মাদ ইবনু বাশশার আল আবদী (রহঃ) ..... আবু হুরাইরাহ (রা:) এর সূত্রে নাবী ﷺ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাত দিন শেষ হবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত না জাহজাহ নামে জনৈক আযাদকৃত দাস শাসনকর্তা হবে।
- (সহীহ, সহীহ মুসলিম (হাঃ একাডেমী) ৭২০১ [ইসঃ ফাঃ ৭০৪৫; ইসঃ সেঃ ৭১০১])
- (সহীহ, সুনান আত তিরমিজী (আল মাদানী প্রকাঃ) ২২২৮ [ইঃ ফাঃ ২২৩১]; সহিহাহ ২৪৪১)
হযরত আবু হুরায়রা (রা:) বলেন, রসূলে পাক ﷺ বলেছেন, জাহজাহ নামের একজন গোলাম ক্ষমতায় না যাওয়া ব্যতীত, কিয়ামত সংঘটিত হবে না।
- (আস-সুনানু কিতাবুল ফিরদাউস ৭৭২)
হযরত কা’বে আহবার (রহ:) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, যখন মানুষের মাঝে হত্যা ইত্যাদি বৃদ্ধি পাবে তখন লোকজন বলবে এ যুদ্ধ মূলতঃ কুরাইশদের সাথে সম্পৃক্ত। সুতরাং কুরাইশদেরকে হত্যা করলে তোমরা শান্তিতে বসবাস করতে পারবে। একথা শুনার পর সকলে মিলে কুরাইশদেরকে এমন ভাবে হত্যা করবে, তাদের একজনও বাকি থাকবেনা। কিন্তু এরপর গিয়ে মানুষ পরস্পর যুদ্ধে লিপ্ত হবে, যেমন জাহেলী যুগে লিপ্ত ছিল এবং গোলামদের একজন মানুষের শাসন ক্ষমতা গ্রহণ করবে। *
- (আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ ১১৫২ [পথিক প্রকা: ১১৪৯, তাহকীক: যঈফ])
- * এই ‘গোলামদের একজন’ই হচ্ছে আজাদকৃত গোলাম জাহজাহ।
হযরত কা’বে আহবার (রহ:) থেকে বর্ণিত, তিনি এরশাদ করেন, যখন ইয়ামানী শাসন ক্ষমতায় বসবে, তখন বায়তুল মোকাদ্দাস এলাকায় অসংখ্যা কুরাইশীকে হত্যা করা হবে।
- (আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ ১১৫৩ [পথিক প্রকা: ১১৫০, তাহকীক: যঈফ])
৬.৪৮.১ ইমাম জাহজাহ এর পরিচয় ও বৈশিষ্ট্য
জাহাজাহ নামক একজন আজাদকৃত দাস তথা গোলাম ক্ষমতায় যাওয়ার ব্যাপারে সহীহ সূত্রে অনেকগুলো হাদিস এসেছে। বিভিন্ন হাদিসে তার বৈশিষ্ট্য ও কর্মকাণ্ড সম্পর্কেও বলা হয়েছে। তবে সেগুলোর বেশির ভাগ আবার দুর্বল পর্যায়ের। হাদিসগুলোর সারসংক্ষেপ এরকম-
ইমাম জাহজাহ, তাকে হাদিসে আরো যে সকল নামে পরিচয় করানো হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে- ইয়ামেনী খলীফা, মাহদী, বনু হাশেমী, আজাদক্রীত দাস বা গোলাম, রসূল ﷺ এর বংশধরদের থেকে হবে ইত্যাদি। কিছু হাদিসে অন্যান্য নামও এসেছে যেমন ‘আসবাইগ ইবনে ইয়াজিদ’ তবে সহীহ হাদিস মতে তার নাম জাহজাহ ই হবে। তিনি ক্ষমতায় আসার পর মুসলিমদের আবার বিজয় শুরু হবে।
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর ইবনুল আ’স (রা:) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, মাহদীর (ইমাম মুহাম্মাদ, আল মাহদী) ইন্তেকালের পর এমন একলোক (মাহমুদ) শাসনভার গ্রহণ করবেন যিনি ইয়ামানবাসীদেরকে তাদের এলাকা থেকে বিতাড়িত করবেন। অতঃপর খলীফা মানসূর ক্ষমতার মালিক হবে, এরপর মাহদী নামক আরেকজন (ইমাম জাহজাহ) শাসনভার গ্রহণ করবেন, যার হাতে রোমানদের শহর বিজয় হবে।
- (আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ ১১৮৬ [পথিক প্রকা: ১১৮৩; তাহকীক: যঈফ])
মুহাম্মাদ ইবনু বাশশার আল আবদী (রহঃ) ..... আবু হুরাইরাহ (রা:) এর সূত্রে নাবী ﷺ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাত দিন শেষ হবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত না জাহজাহ নামে জনৈক আযাদকৃত দাস শাসনকর্তা হবে।
- (সহীহ, সহীহ মুসলিম (হাঃ একাডেমী) ৭২০১ [ইসঃ ফাঃ ৭০৪৫; ইসঃ সেঃ ৭১০১]; আস-সুনানু কিতাবুল ফিরদাউস ৮০৯; সুনান আত তিরমিজী (আল মাদানী প্রকাঃ) ২২২৮ [ইঃ ফাঃ ২২৩১]; সহিহাহ ২৪৪১)
তিনি বাইতুল মুকাদ্দাস থেকে তার শাসনকার্য চালাবেন
‘আবদুল্লাহ ইবনু হাওয়ালাহ্ রা: হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একবার রসূলুল্লাহ ﷺ গনীমতের সম্পদ লাভ করার জন্য আমাদেরকে পদাতিক বাহিনী হিসেবে এক অভিযানে পাঠালেন। আমরা এমন অবস্থায় ফিরে আসলাম যে, আমরা গনীমতের কিছুই লাভ করতে পারিনি। তিনি আমাদের চেহারায় ক্লান্তি ও দুর্বলতার ছাপ দেখতে পেয়ে আমাদের মাঝে (বক্তৃতার উদ্দেশে) দাঁড়িয়ে বললেন, হে আল্লাহ! তাদের দায়িত্ব এভাবে আমার ওপর অর্পণ করো না যে, আমি তাদের পক্ষ হতে তা বহন করতে দুর্বল হয়ে পড়ি। (হে আল্লাহ!) তাদের ওপর এমন কাজের দায়িত্ব অর্পণ করো না যা সমাধা করতে তারা অক্ষম হয়ে পড়ে। (হে আল্লাহ!) তাদেরকে অন্য লোকের ওপরও অর্পণ করো না। কেননা তারা নিজেদের প্রয়োজনকে তাদের প্রয়োজনের উপর গুরুত্ব দেবে। বর্ণনাকারী বলেন, অতঃপর তিনি ﷺ আমার মাথার উপর স্বীয় হাত রেখে বললেন, হে ইবনু হাওয়ালাহ্! যখন তুমি দেখবে খিলাফাত (মদীনাহ্ হতে স্থানান্তরিত হয়ে) পবিত্র ভূমিতে (সিরিয়ায়) পৌছে গেছে, তখন তুমি বুঝে নিবে যে, ভূমিকম্প, দুঃখ-দুর্দশা, বড় বড় নিদর্শনসমূহ ও ফিতনা-ফাসাদ খুবই কাছে এসে গেছে এবং আমার এই হাত তোমার মাথা থেকে যত নিকটে, কিয়ামত সেদিন এটা অপেক্ষাও অতি কাছাকাছি হবে।
- (সহীহ, মিশকাত হাঃ একাঃ ৫৪৪৯; আবু দাউদ ২৫৩৫; সহীহ আবু দাউদ ২২৮৬)
0 মন্তব্যসমূহ